বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে নির্বাচন কমিশন। চলতি বছরের শেষের দিকেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কমিশনের এই তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন কমিশনের ওই উদ্যোগের সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই ভোটার তালিকা সংশোধনের কী এমন প্রয়োজন পড়ল, সেই প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) ফর্ম নিয়ে। কমিশন জানায়, ভোটার তালিকায় নাম তুলতে নতুন আবেদনপত্রে মা-বাবার জন্মের শংসাপত্র থেকে মোট ১১টি নথি জমা দিয়ে বৈধতা প্রমাণ করতে হবে। অর্থাৎ, ২০০৩ সাল থেকে তালিকায় নাম থাকলেই কেউ বৈধ ভোটার বলে গণ্য হবেন না। এদিন বিচারপতিরা জানান, “কমিশনের এই নয়া উদ্যোগ নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বিহারে নির্বাচনের সময় কেন এই উদ্যোগ নেওয়া হল? নির্বাচনের সঙ্গে সংযোগ না করে অন্য সময়েও এই সংশোধন করা যেত।”
শীর্ষ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, “ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পর তাতে হাত দেবে না সুপ্রিম কোর্ট। কাজেই কেউ যদি তালিকা থেকে বাদ পড়েন, তার কাছে চ্যালেঞ্জ করার অধিকার থাকবে না। ভোটার তালিকা সংশোধন করায় কোনও অন্যায় নেই। কিন্তু নির্বাচনের ঠিক মুখে একজন ভোটারকে অবৈধ ঘোষণা করে দিলে তার কাছে যথেষ্ট সময় থাকবে না আত্মপক্ষ সমর্থন করার।” তবে কমিশনের এই উদ্যোগের নেপথ্যে যুক্তি আছে বলেই মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। সাংবিধানিকভাবেই ভোটার তালিকা সংশোধন করছে কমিশন। এমনটাই জানাল শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন
এ দিন আদালতে সওয়াল জবাবের মাঝে আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ বলেন, “এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যাঁরা ভোটার, তাঁদের বৈধতা প্রমাণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।” কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বৈরাচারী বলে আক্রমণ করেন তিনি। বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে আসলে বাংলাকে টার্গেট করা হচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতে মামলা করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। অবশেষে এই দিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানাল, কমিশনের কাজ নিয়ে সমস্যা নয়, সমস্যা সময়কাল নিয়ে।