পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পরেই পাকিস্তানে ‘ওয়াটার স্ট্রাইক’ চালায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। বতিল করা হয় সিন্ধু চুক্তি। জল না পেয়ে ঘুম ছুটেছে পাকিস্তানের। তবে এখানেই শেষ নয়, বিপদ অপেক্ষা করছে আরও। ‘কোয়ার বাঁধ’ প্রকল্প তৈরিতে গতি আনতে চলেছে সরকার। জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলায় চেনাব নদীর উপর কৌশলগতভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধ। আর সেটির নির্মান কাজে গতি আনতে ৩,১১৯ কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে সরকার। আর এই উদ্যোগ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই বাঁধ নির্মাণ হলে ইসলামাবাদের উপর চাপ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গ্রিনফিল্ড স্টোরেজ এবং জলবিদ্যুৎ ‘কোয়ার বাঁধ’ প্রকল্পটি। চেনাব ভ্যালি পাওয়ার প্রজেক্ট লিমিটেড হল এনএইচপিসি ও জম্মু-কাশ্মীর বিদ্যুৎ কর্পোরেশনের একটি যৌথ উদ্যোগ। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই চেনাব ভ্যালি প্রজেক্ট বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে সুদের হার জানতে চাইছে। ৫৪০ ওয়াটের কোয়ার হাইড্রো প্রজেক্টের জন্য ৩১১৯ কোটি টাকা ঋণ নিতে চায় তারা। জম্মু-কাশ্মীরে এই বাঁধ তৈরি করতে মোট ৪,৫২৬ কোটি টাকা খরচ হবে। আর তা তৈরি হলে বাঁধটি ৫৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। শুধু তাই নয়, চেনাব নদীর জলের প্রবাহও এর উপর নির্ভর করবে বলেও দাবি প্রকাশিত খবরে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গতবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে জানুয়ারি এই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন অর্জন করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চেনাব নদীর জলপথ পরিবর্তন করা সম্ভব হয়। বর্তমানে মূল বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। শুধু তাই নয়, ৬০৯ মিটার দীর্ঘ মূল সুড়ঙ্গের খননকাজও শুরু হয়েছে। তবে এই কাজ বেশি দেরি করতে নারাজ নরেন্দ্র মোদী সরকার। আর সেই কারনেই বিপুল অঙ্কের লোন নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
এক নজরে কোয়ার বাঁধ প্রকল্প
জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দুরে এই প্রকল্পের কাজ চলছে। যেখানে প্রায় ১০৯ মিটার উচু একটি কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করা হবে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বছরে ১৯৭৫ মিনিয়ন ইউনিট (MU) বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বলে রাখা প্রয়োজন, ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এই বাঁধ নির্মাণ আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা। আর সেই টার্গেট নিয়েই চলছে কাজ।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
বিশ্লেষকদের কথায়, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জম্মু-কাশ্মীরে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। বিপুল বিদ্যুতের চাহিদার বড় অংশ এই প্রকল্পের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। এমনকী শিল্পের উন্নতিতেও গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই প্রকল্পে চিন্তা বাড়তে পারে পাকিস্তানের। চেনাব নদীর জলের উপর পাকিস্তানের নির্ভরশীলতা রয়েছে। এক্ষেত্রে বাঁধ তৈরি হলে পাকিস্তানের জলের প্রবাহ কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। এক্ষেত্রে চাপ যে বাড়বে তা স্পষ্ট।