কলেজের বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ। প্রতিবাদে ক্যাম্পাসেই গায়ে আগুন দিলেন ছাত্রী। বিজেপি শাসিত ওড়িশায় নক্কারজনক ঘটনা। দেহের ৯৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে ছাত্রীর। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন আরও এক পড়ুয়া। অবশেষে অভিযুক্ত অধ্যাপককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত অধ্যাপকের সঙ্গে বরখাস্ত করা হয়েছে কলেজের প্রিন্সিপালকেও।
বালাসোরের ফকির মোহন কলেজের বিএড পড়ুয়া ওই ছাত্রীর অভিযোগ, বিভাগীয় প্রধান সমীর কুমার সাহু বারবার যৌন হেনস্থা করতেন তাঁকে। যৌনতায় লিপ্ত না হলে ওই ছাত্রীর ভবিষ্যত নষ্ট করে দেওয়ার হুমকিও ওই দিতেন বলে অভিযোগ। গত ১ জুলাই কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান অভিযোগকারী ছাত্রী। সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ জানান, ওই ছাত্রীর অভিযোগ নিয়ে তাঁর কাছে রিপোর্ট জমা করার কথা ছিল অভ্যন্তরীণ কমিটির। তিনি বলেন, “ওই ছাত্রী আমার অফিসে দেখা করেন। প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে তিনি আছেন বলে জানান। অভিযুক্ত অধ্যাপককে ফোন করে অফিসে ডাকতে বলেন। সেই মতো আমি ডেকে পাঠাই। অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হলে ছাত্রী ও অধ্যাপক উভয়কেই ফলাফল ভুগতে হবে বলে আমি সতর্ক করি। অধ্যাপক অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে অভিযোগে অনড় থাকেন ওই ছাত্রী।”
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
প্রিন্সিপালের কাছে গিয়েও সুরাহা না মেলায় শনিবার কলেজের গেটের বাইরেই প্রতিবাদে সামিল হন ওই ছাত্রী ও তাঁর সহপাঠীরা। সেসময় আচমকাই প্রিন্সিপালের অফিসের সামনে গিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন ওই ছাত্রী। সেই অবস্থাতেই কলেজের করিডরে ছুটতে থাকেন। এক ছাত্র আগুন নেভাতে এলেও তাঁর জামায় আগুন ধরে যায়। তাঁকে বাঁচাতেও ছুটে যান অন্যান্যরা। যদিও দেহের ৭০ শতাংশ পুড়ে যায় ওই ছাত্রেরও।
গোটা ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে। অভিযুক্ত অধ্যাপক ও কলেজের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওড়িশার উচ্চশিক্ষা দফতরের মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরাজ। বালাসোরের পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রমাণ জড়ো করতে পুলিশের টিম গিয়েছে অকুস্থলে। দোষী প্রমাণ হলে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।” এদিকে অগ্নিদগ্ধ দুই পড়ুয়াই ভূবনেশ্বর এইমসে পাঞ্জা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।