তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রের শিক্ষাগত যোগ্যতা ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কোথাও সেন্ট পল্স, কোথাও গোয়েঙ্কা, তাঁর ডিগ্রির উৎস ঘিরে একাধিক নথিতে উঠে আসা ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ঘনীভূত করেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে দাবি করেন, লাভলি মৈত্রর শিক্ষাগত নথিতে ‘বিস্ময়কর অসঙ্গতি’ রয়েছে। তাঁর কথায়, সরকারি নথি অনুযায়ী লাভলি ২০২০ সালে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক পাশ করেছেন। অথচ তৃণমূলের নির্বাচনী প্রচারপুস্তিকায় লেখা রয়েছে, সেন্ট পল্স কলেজ। এমনকি বিধানসভার সদস্য পরিচিতি পুস্তিকায় দেখা যাচ্ছে গোয়েঙ্কা কলেজের নাম, যেখানে ইতিহাস বিষয় পড়ানোই হয় না বলে দাবি বিজেপি নেতার।
এই তথ্যগত বিভ্রাটকে হাতিয়ার করে সুকান্ত আরও বলেন, ‘এই দল ক্ষমতায় থাকলে শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বোঝা কঠিন নয়।’ বিতর্কের মুখে লাভলি মৈত্র দাবি করেন, মনোনয়নপত্রে তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি ডিগ্রি পেয়েছেন। অন্য নথিতে ভিন্ন তথ্য থাকলে সেটা ‘ছাপার ভুল’ বলেই দাবি তাঁর। পাশাপাশি বলেন, সেন্ট পল্স কলেজে আমি পড়তাম, কিন্তু অভিনয়ের কারণে শেষ করতে পারিনি। গোয়েঙ্কায় কখনও পড়িনি, কীভাবে ওই নাম এল, জানি না।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
বিরোধীদের প্রশ্ন, যদি ছাপার ভুলই হয়ে থাকে, তবে তা কীভাবে পৌঁছল বিধানসভার মত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিতে? তা হলে কি তথ্য যাচাই না করেই পুস্তিকা প্রকাশিত হয়?বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূল আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কার্যত উধাও হয়েছে। লাভলি মৈত্রের ঘটনায় সেই অভিযোগ আরও জোরালো হল বলেই মত তাঁদের।
তৃণমূল অবশ্য পুরো বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় রাজনীতিকরণ বলেই দেখছে। কিন্তু তথ্য বিভ্রাটের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের রাজ্য রাজনীতিতে উঠছে বড় প্রশ্ন, এটা কি শুধুই ছাপার ভুল, না কি শিক্ষাগত যোগ্যতা গোপনের চেষ্টা?