উত্তর ভারতের লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে দ্রুত বেড়ে চলেছে গঙ্গা নদীর জলস্তর। এর ফলে উত্তর প্রদেশের একাধিক জেলায় বন্যা সতর্কতা জারি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বারাণসী ও প্রয়াগরাজ। উত্তর প্রদেশের বহু জেলায় এখন গঙ্গার জলে বন্যার আশঙ্কা তীব্র। প্রশাসন সতর্ক থাকলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বারাণসীতে গঙ্গা এখন পূর্ণ প্রবাহে। শহরের সবক’টি ৮৪টি ঘাটই একেবারে জলের তলায় চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে ললিতপুরের মাতাটিলা ড্যামের ১৮টি এবং গোবিন্দ সাগর ড্যামের ৮টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকে যাওয়ার কারনে নিয়মিত পূজা-অর্চনা ও ঘাট সংলগ্ন ধর্মীয় কাজকর্মও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বারাণসীতে গঙ্গার জলস্তর ০.৭ মিটার বেড়েছে।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
এ মাসের শুরু থেকেই টানা বৃষ্টির কারণে ঘাটগুলো ডুবে যায় এবং নদীর জল বিপদসীমার ওপরে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ঘাটের একটি করে সিঁড়ি গঙ্গার জলে তলিয়ে যাচ্ছে। বারাণসীর বিখ্যাত মণিকর্ণিকা ঘাট সম্পূর্ণ জলের নিচে চলে গেছে। আশেপাশের মন্দিরগুলিও প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে প্রয়াগরাজের রাম ঘাট-ও নদীর জলে ডুবে গেছে।
সম্ভলে গঙ্গার জলস্তর এখন ১৭৭.৬০ মিটার-এ পৌঁছেছে, যা খুবই বিপজ্জনক স্তর। জেলার অন্তত ৩৬টি গ্রামে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলাশাসক ডঃ রাজেন্দ্র পেনসিয়া জানিয়েছেন, “আমরা ১৬টি ফ্লাড কন্ট্রোল পোস্ট এবং ১৩টি ত্রাণ আশ্রয়কেন্দ্র চিহ্নিত করেছি। বন্যা-ত্রাণ সামগ্রীর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং আমরা পুরোপুরি সতর্ক আছি। ২০১০ সালের পর এই প্রথম এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
আরও পড়ুন
এখানেও গঙ্গার জল ক্রমাগত বাড়ছে। শহরের নিম্নাঞ্চলে জল ঢুকে পড়েছে, বহু বাড়ি জলে প্লাবিত হয়েছে। সোমবার গঙ্গার জল প্রয়াগরাজের বড় হনুমান মন্দির পর্যন্ত ঢুকে পড়ে। উত্তর প্রদেশের বহু জেলায় এখন গঙ্গার জলে বন্যার আশঙ্কা তীব্র। প্রশাসন সতর্ক থাকলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।