প্রথমে ঋত্বিক ঘটক, এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকরের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশে। এবার ‘নতুন বাংলাদেশে’ আক্রান্ত স্মৃতিবিজড়িত সত্যজিৎ রায়ের বাড়িও। যা নিয়ে দেশের মধ্যে তো বটেই, মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউনূস সরকারকে বার্তা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। যা নিয়ে প্রবল চাপে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার। জানা যাচ্ছে, আজ বুধবার সকাল থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে বাড়ি ভাঙার কাজ। এমনকী ভারতের চাপে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান প্রশাসনের আধিকারিকরা। গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়।
গত কয়েকমাসে সে দেশে মুছে ফেলা হয়েছে একের পর এক ইতিহাস। যা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়েছে নোবেলজয়ী ইউনূসকে। কিন্তু বদল হয়নি অবস্থার। ময়মনসিংহ নগরের হরিকিশোর রায় রোডের প্রাচীন বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে বাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। যদিও বিষয়টি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জানত না বলেই দাবি। বাড়িটির দায়িত্বে থাকা শিশু অ্যাকাডেমি গোটা বাড়ির দায়িত্ব। আর এই সংস্থা বাড়ি ভেঙে বহুতল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বলে দাবি।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক আধিকারিক সাবিনা ইয়াসমিন সে দেশের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত না হলেও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি হিসেবে সেটি শতবর্ষ প্রাচীন। ওই আধিকারিকের কথায়, আজ বুধবার সকাল থেকে বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ আছে। তবে ইতিমধ্যে বাড়িটির এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে ওই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
তবে এই বিষয়ে শীর্ষ আধিকারিকদের বিস্তারিত জানিয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের জেলা শিশুবিষয়ক আধিকারিক মেহেদী জামান প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সেখানে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা এবং রাতেই কেন্দ্রের বিবৃতি রীতিমত চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশ সরকারকে। প্রথম আলোর প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাতেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বাড়িটি পরিদর্শন করেন।
বলে রাখা প্রয়োজন, সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি ভেঙে ফেলা ঘটনার সামনে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, এই ঘটনা দুঃখজনক। বাড়ি যাতে সংরক্ষণ করা হয় সেই আবেদনও বাংলাদেশ সরকারের কাছে রাখেন প্রশাসনিক প্রধান। এমনকী ভারত সরকারকেও এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কথা বলেন। রাতেই বিবৃতি দেয় কেন্দ্র। যেখানে বাড়িটিকে ইউনূস সরকার যাতে সংস্কার করে সেই আবেদন জানানো হয়। এমনকী প্রয়োজনীয় টাকাও ভারত সরকার দিতে চায় বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। এই বিষয়ে আজ বুধবার সকালে টুইট করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।