ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে গমন করেছেন রামদাস! মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল মাত্র ১৮ বছর। প্রিয় রামদাসের মৃত্যুতে বড়ই শোকাহত হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের দাপুটে তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। একই ভাবে শোকাতুর ভাতারের এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দারাও। রামদাসের দৌরাত্ম্য একটা সময় এরুয়ার গ্রামে কৃষিজীবী মানুষজনের অনেকেই বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। তবু আজ তারাও ব্যাথিত হৃদয়ে পরলোকে রামদাস সুখ শান্তি কামনা করছেন।
অনেকেই হয়ত ভাবছেন রামদাস নামে কোনও মানুষের কথা এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে। কিন্তু না, তা নয়। এই রামদাস আসলে একটি ছাগল। অবাক হলেন তো! হ্যা এটাই সত্যি। তবে যে সে ছাগল নয়, খোদ বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর আদরের ছাগল। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিল রামদাস। বুধবার সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর একেবারে শ্রদ্ধাসহকারে রামদাসকে সমাধিস্থ করা হয়।
পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতা মানগোবিন্দ অধিকারী ডাকাবুকো নেতা হিসাবেই এলাকায় পরিচিত। তবে রামদাসের প্রতি দুর্বলতা ছিল বিধায়কের। জেলা পরিষদের শিক্ষা এবং তথ্য সংস্কৃতি কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার ভাতারেরই বাসিন্দা। তিনি জানান, ‘রামদাস ছিল মানগোবিন্দ মেসোমশাইয়ের খুব আদরের। উনি মানুষজনের পাশাপাশি পশু ও পাখিদেরও ভালবাসেন’। শান্তনুর কথায়, মেসোমশাই বিধায়ক হবার অনেক আগে থেকেই খুব যত্নে ‘মানুষ’ হয়েছে রামদাস। বয়সজনিত কারণে সে অসুস্থ ছিল। তাঁর কথায়, রামদাসের একটি পা ভেঙে গিয়েছিল। ইউরিন ইনফেকশন হয়েছিল। বুধবার রামদাস মারা যাওয়াও খুবই দুঃখ পেয়েছেন বিধায়ক।
অন্যদিকে এলাকার মানুষজন জানান, বড় আকৃতির পুরুষ ছাগল রামদাস। নিঃসন্তান বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী পশুপ্রেমী। এলাকার মানুষজন জানিয়েছেন, তাঁর আরও গরু ছাগল রয়েছে। তার মধ্যে রামদাস ছিল বেশি আদরের। তাই তার মৃত্যুতে আঘাত পেয়েছেন মানগোবিন্দ বাবু। গ্রামের মানুষজন আরও জানাচ্ছেন, রামদাস কখনও কারও চাষের জমিতে চলে গেলেও কেউ কিছু বলত না। সবাই তাকে চিনত। ফলে বিধায়কের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যেতেন গ্রামের মানুষজন।
বিধায়কের আত্মীয় সরকারের কর্মচারি শুভেন্দু সাঁই জানাচ্ছেন, ‘এই যুগে মানুষ মানুষকে ভালবাসে না, সেখানে মনুষ্যেতর প্রাণীর প্রতি এই ভালবাসা একটা নজির।’ বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী জানিয়েছেন, বর্তমানে আমার বাড়িতে ৬ টি গরু ও একটি ছাগল ছিল। কিন্তু সেই পোষ্য ছাগলটি মারা গেল। তাঁর কথায়, ১৮ বছরের বেশী আমার কাছে ছিল। ২ টি ছাগল ছিল। একটি অনেক আগেই মারা যায়।