দিল্লির বিষাক্ত বাতাস দূর করতে এবার বিরাট পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার। আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দিল্লিতে শুরু হতে চলেছে ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম বৃষ্টির পরীক্ষামূলক প্রকল্প। ক্লাউড সিডিং আসলে একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় বিশেষ ধরনের রাসায়নিক কণিকা যেমন সোডিয়াম ক্লোরাইড মেঘে ছড়িয়ে দিয়ে কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি ঘটানো হয়। এই পদ্ধতিতে বৃষ্টির মাধ্যমে বায়ুতে ভেসে থাকা ক্ষতিকর ধূলিকণা ও দূষক পদার্থ ধুয়ে ফেলা যায়। ফলে বাতাস অনেকটাই পরিষ্কার হয়।
দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিংহ সিরসা শুক্রবার জানান, সেপ্টেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহে এই পরীক্ষা চালানো হবে। আগে এটি জুলাইয়ে হওয়ার কথা ছিল, তবে আবহাওয়া সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন আইআইটি কানপুর, ইন্ডিয়ান মেটেওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এবং আইআইটিএম পুনের পরামর্শে সময় পরিবর্তন করা হয়েছে।
কিন্তু কেন সেপ্টেম্বর বেছে নেওয়া হয়েছে এই ক্লাউড সিডিং প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় হিসেবে? জানা যাচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাসে বর্ষা বিদায় নিলেও আকাশে মেঘ থাকে, যা ক্লাউড সিডিংয়ের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে আইআইটি কানপুর। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দিল্লি সরকার ৩.২১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
ক্লাউড সিডিং প্রকল্পে ব্যবহৃত বিমানটি হল Cessna 206-H (VT-IIT)। এতে ক্লাউড সিডিংয়ের জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন এই প্রকল্পের জন্য পূর্ণ অনুমতি দিয়েছে। বিমানের চালক ও টেকনিক্যাল টিম সব ধরনের লাইসেন্স ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
জানা গিয়েছে যে, এই বিমান মোট ৫ বার উড়ান দেবে এবং উত্তর দিল্লির দূষিত এলাকাগুলি যেমন রোহিণী, বাওয়ানা, আলিপুর, বুরারী এবং আশেপাশের উত্তরপ্রদেশের লোনি ও বাঘপত অঞ্চলে কাজ করবে। এই বিষয়ে মন্ত্রী জানিয়েছেন, সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। কোনো নিষিদ্ধ অঞ্চলে উড়ান হবে না, এবং বিমানে কোনো রকমের ফটোগ্রাফি বা ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে না, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন-র নিয়ম মেনেই সব কিছু করা হবে।
কিন্তু ক্লাউড সিডিংয়ে এত গুরুত্ব কেন দিল্লির সরকারের। আসলে, বর্ষার পরে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দিল্লিতে বায়ু দূষণ অনেক বেড়ে যায়। এই সময়ে কৃত্রিম বৃষ্টি হলে বাতাস পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সফল হলে, এই প্রযুক্তি দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি বড় হাতিয়ার হতে পারে।