এশিয়ার প্রাচীনতম ফুটবল প্রতিযোগিতা হল কলকাতা ফুটবল লিগ। ১২৭ বছরের সেই লিগ এখন পরিণত হয়েছে মানুষের হাসির খোরাকে। কখনও খেলোয়াড় চোট পেলে ছাতা দিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা হচ্ছে, তো কখনও আবার টিপ টিপ বৃষ্টিতেই ভেস্তে যাচ্ছে খেলা। আর এ বার স্থগিত হয়ে গেল ডার্বির মত ‘মহারণ’। কারণটা আর কিছুই নয়। ম্যাচ আয়োজনেই সমস্যা।
কলকাতা লিগ যেন চোখে আঙুল দিয়ে বারবার দেখিয়ে দিচ্ছে, ঐতিহ্য বলে আসলে কিছু হয় না। কিংবা হলেও তার মূল্য অন্ততঃ আজকের বাজারে নেই। তাই দিনে দিনে প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে উঠছে ১৮৯৮ সালে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতাটির দৈন্যদশা। যেমন এই ডার্বি। এই শনিবার না হলেও যা পুরোপুরি বাতিল হচ্ছে না। কল্যানী স্টেডিয়ামে আগামী শনিবার একই সময়ে মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। আচ্ছা, তাই যদি হয় তা হলে সে দিনও যে কোনও সমস্যা উদয় হবে না সেই গ্যারান্টি কি আগে থেকেই দেওয়া যাচ্ছে?
আইএফএ’র দাবি, এই শনিবার খেলা হলে পর্যাপ্ত সময় হাতে পাওয়া যেত না। সেক্ষেত্রে টিকিট বন্টন থেকে শুরু করে দুই দলের সমর্থকদের মাঠে ঢোকানো বা মাঠ থেকে বের করার জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা, সবটাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ত। কাজেই, ম্যাচ ৭ দিন পিছিয়ে যাওয়ায় হাতে অনেকটা সময় পাওয়া গেল। হ্যাঁ, অবশ্যই অকাট্য যুক্তি। তাতে কোনও সন্দেহই নেই। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, এভাবে আর কতদিন?
এর আগে বৃষ্টির জেরে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল বনাম বেহালা এসএস ম্যাচ। সেই খেলাও পরে কোনও একদিন হবে বলে জানানো হয়েছিল আইএফএ’র তরফে। আর এ বার বহুল কাঙ্খিত ইস্ট-মোহন দ্বৈরথও পিছিয়ে গেল এক সপ্তাহ। যা নিছকই একটি ম্যাচ নয়। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের আবেগ। সবচেয়ে বড় কথা, ম্যাচ আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে না। এ কথাটা সূচি তৈরির সময় ভাবা হয়নি কেন? তখনই নিরাপত্তার দিকটা মাথায় রেখে সূচি এমনভাবে কেন সাজানো হল না যাতে নির্ধারিত দিনেই ম্যাচ আয়োজন করা যায়? প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই। সেই সঙ্গে থাকছে একটি সহজবোধ্য জবাবও। কলকাতা লিগ এখন ‘দুরাবস্থা’ শব্দটির অন্যতম সমার্থক।