প্রয়াত কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ সিপিএম নেতা ভিএস অচ্যুতানন্দন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। আজ সোমবার তিরুঅনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হন বামনেতা। জানা গিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে একাধিক বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গতমাসে হার্ট অ্যাটার্কের কারনে হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু আজ সোমবার সকাল থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। দুপুরে মৃত্যু হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকস্তব্ধ গোটা রাজনৈতিকমহল।
বর্ষীয়ান বামনেতার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, প্রবীণ বামনেতা এবং কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভিএস অচ্যুতানন্দনের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, বর্ষীয়ান নেতার মৃত্যুতে শূন্যতার সৃষ্টি হবে। শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও। অন্যদিকে ভিএস অচ্যুতানন্দনের মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজায়ন।
গিয়েছেন সে রাজ্যের বাম শীর্ষ নেতৃত্বও।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
দলের তরফে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বলে রাখা প্রয়োজন, আলেপ্পি জেলায় অচ্যুতানন্দনের জন্ম ১৯২৩ সালের ২০ অক্টোবর। দেশ তখন স্বাধীন হয়নি, ব্রিটিশরাজ। সাল ১৯৪৬, প্রথম রাজনীতিতে আসা। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পুন্নাপ্রা ভয়েলার ধর্মঘটের মাধ্যমে প্রথম রাজনীতিতে পা রাখা ভিএস অচ্যুতানন্দন। এরপর ধীরে ধীরে দল এবং সে রাজ্যের মানুষের কাছে ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছিলেন। এমনকী রাজনীতিতে ‘ভিএস’ নামেই বিশেষ পরিচিতি ছিল।
তবে আর্থিক কারনে বেশিদূর পড়াশোনা হয়নি। মাত্র সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করতে পারেন। এরপর ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রথমে কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) -র সদস্যদের মধ্যে একজন ছিলেন ভিএস। এরপর ১৯৬৪ সালে সিপিএম (মার্কসবাদী) গঠনে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভূমি সংস্কার, শ্রম অধিকার সহ একাধিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ২০০৬ সালে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী হন বর্ষীয়ান বামনেতা। সেই পদে ছিলেন ২০১১ সাল পর্যন্ত।
দীর্ঘ এই সময়ে সে রাজ্যের তো বটেই, সেখানকার মানুষের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেন। শুধু তাই নয়, রয়েছে একাধিক নজিরও। কেরল বিধানসভায় সাতবারের সদস্য হয়ে ছিলেন ভিএস অচ্যুতানন্দন। এমনকী তিনবার বিরোধী দলনেতা হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন। প্রশাসনিক পদ সামাল দেওয়ার পাশাপাশি দলের রাজ্য সম্পাদকের গুরুদায়িত্বও সামাল দিয়েছেন।