ইজরায়েলের সঙ্গে চলা হামাসের লাগাতার লড়াইয়ে ভয়ঙ্কর সংকটে গাজা।বেঁচে থাকার জন্য যে ন্যূনতম জল ও খাবার দরকার তাও পাচ্ছে না সেখানকার শিশুরা।যেকোনও সময় হাতছানি দিচ্ছে সাক্ষাৎ মৃত্যু।রাষ্ট্রসঙ্ঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় অপুষ্টি ও খাদ্যাভাব ভয়াবহ আকার নিয়েছে। আর শিশুদের বেঁচে থাকাটাই যেখানে অনিশ্চিত সেখানে বড়দের জীবন তো আরও সংকটজনক।
পাশাপাশি থাকা ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের সঙ্কট আজকের নতুন নয়। কোনও না কোনও ছুতোয় গোলাগুলি ছোঁড়া লেগেই থাকে দুদেশের মধ্যে।তবে ৭ অক্টোবর ২০২৩ হামাসের নেতৃত্বে ইজরায়েলের উপর হামলার পরেই পালটে যায় পরিস্থিতি।এই হামলায় এক দিনে ৮৬৯ ইজরায়েলি অসামরিক নাগরিক এবং কমপক্ষে ৩৪৯ ইসরায়েলি সৈন্য ও পুলিশের মৃত্যু হয়।পণবন্দী করা হয় প্রায় ২৫০ জনকে।এর বদলা নিতে গাজা আক্রমণ করে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
সেই থেকেই অবিভাবক হিসেবে পাশে থাকা আমেরিকার সমর্থনে গাজায় ইজরায়েলি হামলা চলেছে।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব জানাচ্ছে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইজরায়েলের হামলায় সেখানে ৫৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছেন গাজার বাসিন্দারা। অনাহার-অর্ধাহারে মৃত্যু হচ্ছে অসহায় শিশুদের। প্রতিদিন গোটা পৃথিবী দেখে চলেছে গাজায় লাগাতার ইজরায়েলি হামলা আর শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যুর খবর।
হামাস নিধনের নামে নির্বিচারে এই হামলা বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে যেন ক্লান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘ। সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। মানুষের বেঁচে থাকার শেষ ভরসাগুলো ভেঙে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতেই এবার গাজায় যুদ্ধ অবসানের দাবিতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ২৫টি দেশ।এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে আমরা একটা সোজা ও জরুরি বার্তা দিয়ে বলছি গাজার যুদ্ধ এখনই শেষ হওয়া প্রয়োজন। কারণ গাজার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ইস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, লাতভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বিদেশমন্ত্রীরা। ২২ জুলাই গ্রিস, মাল্টা এবং সাইপ্রাসও এতে যোগ দিয়েছে।
ইউটিউবেও জাজবাত, আপডেট থাকুন আমাদের সঙ্গে
গোটা বিশ্ব গাজার হরহত্যা ও দুর্দশার চিত্র দেখে শিউড়ে উঠলেও হামাস দমন করতে এতে দোষের কিছু দেখছে না ইজরায়েল। উল্টে ইজরায়েলি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টেইন এই যৌথ বিবৃতিকে ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।হামাসই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ করেছে নেতানিয়াহুর দেশ। রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ নানাভাবে আবেদন করলেও তাতে কান দিতে নারাজ ইজরায়েল। যুদ্ধের নামে নির্বিচারে নিরীহ মানুষের উপর চালিয়ে যাওয়া হত্যাযজ্ঞ দেখেও চুপ করে বসে থাকা, সম্ভবত এটাই আজকের সভ্য পৃথিবীর দস্তুর।