অভিজিৎ বসু
টাকা উদ্ধারের ৩ বছর। পিসি ভাইপোর টাকা। সেই পার্থ অর্পিতার টাকা। নিয়োগ দূর্নীতির টাকা। বিজেপির সাহায্যে ভালোই আছে কিন্তু বেশ তৃণমূল। ২২ জুলাই ‘টাকার পাহাড়’ দিবস। সত্যিই তো এই ছবি কি আমরা বিস্মৃত হলাম একদম। যে ছবি,যে খবর, সেই গুরু গম্ভীর ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ির ভারিক্কি চেহারা একদম থপ থপ শব্দ না করে নিঃশব্দে হেঁটে চলে বেড়ানো এক বিরাট মা মাটি আর মানুষের কথা ভাবা এক রাজনৈতিক শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কী আমরা ভুলে গেলাম একদম সবাই। আর সাথে সাথে ভুলে গেলাম পার্থর সঙ্গী অপার কথা আর সেই বস্তা ভর্তি টাকার কথা।
চাঁদের পাহাড় থেকে টাকার পাহাড়-এর কথা। সেই পার্থ আর অর্পিতার সেই বিখ্যাত জুটির কথা। একদম ঠিক যেনো উত্তম কুমার আর সুচিত্রা সেনের রূপোলী পর্দার স্টাইল। যে স্টাইল এই বঙ্গে খুব বেশিদিনের পুরনো নয়। তবু এই বাংলা মিডিয়ার সামনে থেকে কেমন করে যে সেই টাকার ছবি হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেলো কে জানে। যে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার ছবি দেখে কত হইচই- হুল্লোড় পড়ে গেছিল রাজ্য জুড়ে একদিন। আজ সেই বঙ্গে এক অন্য ছবি, অন্য আন্দোলন এর ভোট কুশলী হয়ে অন্যরকম রাজনীতি করা। যে রাজনীতি শুধুই ভোটের জন্যে আর নিজের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
কী বা আসে যায় টাকার পাহাড়, নোটের মাঝে হারিয়ে যাওয়া বা লুকিয়ে পড়া সেই পার্থ আর অপার দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের কাহিনি যদি হারিয়ে যায় আমাদের স্মৃতি থেকে। যে গল্প আর কাহিনি একদিন কলকাতার পাড়ায় পাড়ায় আর গ্রামের মেঠো রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছিল দ্রুত হারে। সেই টাকায় মুড়ে যাওয়া এক রাজনীতির মানুষের ঝাঁ চকচকে জীবন। যে জীবনে জড়িয়ে আছে অপার বুকভরা ভালোবাসা। যে জীবন আজ অন্ধকার জেলের কুঠুরিতে মাথা খুঁড়ে মরে আর কেঁদে কেঁদে ফেরে ঘুরে ঘুরে। সেই সরকারের দু নম্বর এক ভারী মন্ত্রী। সেই বিখ্যাত কর্পোরেট স্টার পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর জেল হাজতে চলে যাওয়া। কারুর কারুর অভিযোগ জেল হাজতে নয় শহর কোলকাতার কোনও হাসপাতালে লুকিয়ে আছেন তিনি। যদিও এই অভিযোগ এক রাজনৈতিক দলের।
আরও পড়ুন
তবে এই সবের মাঝে শান্তিনিকেতনে ঘুরতে এলেই পর্যটকদের সেই বিখ্যাত অপার বাড়ি তিন চাকার টোটো করে দুলকি চালে ঘুরে তার সৌন্দর্য উপভোগ করে ঘুরে দেখা। এইসব কিছুই আজ বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে কবেই এই বাংলার মানুষের মন থেকে। যে বঙ্গের মানুষ আজ ভাষার জন্য লড়াই করে। যে বঙ্গের মানুষ ভিন রাজ্যে তাদের রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক কাজে গিয়ে মার খেলে লড়াই করে। যে বঙ্গের মানুষ অপা, উর্বশী, মেনকা আর রম্ভাদের ভুলে গেছে কবেই। এখন শুধুই বাংলা, বাংলা ভাষার অস্মিতা, বাঙালির অস্তমিত অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই করতেই বেশি ব্যস্ত সবাই। কি দরকার এই টাকার কথা আর সেই হারিয়ে যাওয়া রাজনীতির মানুষের কথা মনে রেখে।
