দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা মতোই স্বাক্ষরিত হয়ে গেল ভারত- ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস।ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে স্টারমারের বিদেশনীতির প্রধান বিষয় ছিল মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। দীর্ঘদিনের উদ্যোগ ছিল দিল্লিরও।ভারত ও ব্রিটেনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লন্ডনে পা রাখার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপরই ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের শুরু হল বলে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। রাজা তৃতীয় চার্লস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের কথাও লেখেন তিনি। কৌশলগত দিক দিয়ে মোদির এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি।
কিন্তু এই চুক্তির ফলে কী লাভ হবে ভারতের? বলা হচ্ছে, এই চুক্তি থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন ভারতীয় কৃষকরা। বিস্তৃত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তির জেরে ভারতের কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য এখন ব্রিটেনের বাজারে শুল্কমুক্ত হিসেবেই প্রবেশাধিকার পাবে। এই চুক্তিতে প্রস্তাব করা হয়েছে যে ব্রিটেনের বাজার এখন ভারতীয় কৃষিপণ্যের জন্য উন্মুক্ত হবে এবং ভারতের কৃষকরা ইউরোপীয় দেশগুলির রপ্তানিকারকদের তুলনায় আরও ভালো সুবিধা ভোগ করবেন।
এই নতুন চুক্তির আওতায় ভারতের হলুদ, গোলমরিচ, এলাচ, আমের পাল্প, আচার এবং ডালের মতো প্রক্রিয়াজাত পণ্য শুল্কমুক্ত হিসেবেই যাবে ব্রিটেনের বাজারে। পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, কেরল এবং তামিলনাড়ুর মতো উপকূলীয় রাজ্যগুলো থেকে চিংড়ি, টুনা, ফিশমিল ইত্যাদি ব্রিটিশ বাজারে শুল্কমুক্ত হিসেবেই প্রবেশাধিকার পাবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর, প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়েছেন, এই চুক্তি ‘ব্যবসা করার খরচ’ কমাবে, পাশাপাশি ‘ব্যবসা করার আত্মবিশ্বাস’ও বাড়াবে। মোদির বার্তা, এই চুক্তি গোটা বিশ্বের স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধিকেও শক্তি জোগাবে। অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এই বাণিজ্য চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলেই বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, এর ফলে দু’ দেশেই মজুরি এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য চুক্তি স্কটল্যান্ডে হুইস্কি ডিস্টিলারদের উন্নতি করবে। পাশাপাশি এর ফলে ভারতীয় পোশাক, জুতো, খাবারের দাম ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছে অনেক কমে যাবে।