নির্বাচন কমিশন মানেই দেশের বা রাজ্যের সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করাই একমাত্র কাজ নয়। বরং ভোটদানের সাংবিধানিক অধিকার সম্বন্ধে সচেতনতা তৈরি এবং বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে দেশবাসীকে সম্পৃক্ত করার কাজও নির্বাচন কমিশনের কর্মসূচির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আর সেই লক্ষ্যেই ‘ সিস্টেমেটিক ভোটার এডুকেশন এন্ড ইলেক্টোরাল পার্টিসিপেশন ‘ কর্মসূচির অঙ্গীভূত হয়ে কলকাতার নিউ আলিপুর কলেজে অনুষ্ঠিত হলো ভোটার সচেতনতা অভিযান।
কলকাতার রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই কলেজে সংশ্লিষ্ট ইআরও বা ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে এবং দক্ষিণ কলকাতা জেলা নির্বাচন আধিকারিকের নেতৃত্বে আয়োজিত হয় ‘ভোটশিক্ষা’ সংক্রান্ত এই বিশেষ কর্মসূচি। এই ‘ ভোটশিক্ষার ‘ কর্মসূচিতে শিক্ষক ও পরামর্শদাতার ভূমিকায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগী এবং উপ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুব্রত পাল। কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং সকলকে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার বার্তা দেন রাজ্যের এই দুই নির্বাচনী আধিকারিক।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
বস্তুত, নিউ আলিপুর কলেজে একটি সক্রিয় ইলেক্টোরাল লিটারেসি ক্লাব রয়েছে, যা নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। নির্বাচন কমিশন মনে করে যে সচেতন ও উৎসাহী তরুণ প্রজন্মই একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত্তি। সে কারণে কলেজ স্তরের পড়ুয়াদের এই বিশাল গণতান্ত্রিক কর্মযজ্ঞে সামিল করানো কমিশনের কাছেও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেই অর্থে নিউ আলিপুর কলেজের এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি যথেষ্টই সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তরের কর্তারা।
এই কর্মসূচিতে কলেজের ১৫০ জন ছাত্রছাত্রী, যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি, স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং ভোটার সচেতনতা অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে কলেজ পড়ুয়া রা ভোটার হিসেবে শপথ নেন জি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় এবং শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন পরিচালনায় তারা একযোগে অংশগ্রহণ করবেন। ভারতীয় নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে ইন্টারএকটিভ কুইজ এবং ভোট দান গণতন্ত্রের একটি শক্তিশালী প্রক্রিয়া এই বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন
কলেজ প্রাঙ্গনে হেল্পডেস্ক, রেজিস্ট্রেশন ক্যাম্প, ডেমোক্রেসি ওয়াল, সেলফি বুথ সহ নানা আকর্ষণীয় আয়োজন করা হয় যা কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে বলেও মনে করেন নির্বাচনী কর্তারা। নতুন ভাবে ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের এপিক কার্ড তুলে দেন রাজ্যের অতিরিক্ত সিইও ও ডেপুটি সিইও। সচেতনতা অভিযানের তাৎপর্যপূর্ণ দিকটি হল বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ৪৫টি নতুন ফর্ম ৬ আবেদন পত্র জমা পড়েছে এই কর্মসূচিতে। যা গণতান্ত্রিক ভোট প্রক্রিয়ার সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে।