দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বন্ধ কারখানার জমিতে এবার নতুন করে শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিল টিটাগর ওয়াগন। আজ শুক্রবার হিন্দমোটরে রীতিমতো জাঁকজমক করে ভূমি পুজো করা হয়। রাজ্যে শিল্প যে আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে আরও একবার তারই ইঙ্গিত মিলল। সম্প্রতি ১২ জুলাই হঠাৎই বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রক্ষীদের সমস্ত জিনিসপত্র সরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে।
পরবর্তীকালে বর্তমান রাজ্য সরকার বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার পরিক্তত্য ৪০ একর জমি ৯৯ বছরের লিজে টিটাগড় কারখানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে যাতে নতুন করে কোনও বিতর্ক না সৃষ্টি হয়, তার জন্য বৃহস্পতিবারই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারখানার জমিতে বোর্ড লাগানো হয়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতেই এই কাজ করা হয়। ওই বোর্ডের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় যে বর্তমান এই জমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে।
এদিকে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর আজ শুক্রবার সকাল থেকেই নতুন উদ্যোগে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পের জমিতেই শিল্পের নতুন করে যাত্রা শুরু হল। আর তারই প্রথম ধাপে এদিন মহাসমারোহে ভূমি পূজোর আয়োজন করা হয়। বন্ধ শিল্পের জমিতে যে নতুন করে শিল্পের সম্প্রসারণ হতে চলেছে তাতে আগামী দিনে নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
হিন্দমোটরের এই টিটাগড় ওয়াগন লিমিটেড কারখানা থেকে মেট্রো রেলের রেক সরবরাহ করা হয়। গোটা দেশেই তা যায়। গুণগত মানের দিক থেকে মেট্রোর এই রেক অত্যন্ত উন্নত মানের। তাই এর চাহিদাও রয়েছে। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালোরে মেট্রো রেলের কাজের জন্য টিটাগ একটি বড় বরাত পেয়েছে। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বড় জায়গার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। সেক্ষেত্রে শিল্পের স্বার্থে রাজ্য সরকার শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশেষ সূত্রে জানা যায় এতদিন পর্যন্ত এই কারখানায় মেট্রোর রেক অ্যাসেম্বেল করা হতো। আগামী দিনে এই জমিতেই শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে মেট্রো রেক তৈরির প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করা হবে। জানা যায়, এই রেক তৈরির জন্য বেশ কিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ চেন্নাই থেকে সরবরাহ করা হত। কিন্তু সেক্ষেত্রে অনেকটা সময় অপচয় হয়ে যেত। সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে এই জমিতেই সেই সমস্ত শিল্প সংস্থা সেই সমস্ত যন্ত্রাংশ তৈরি করবে অর্থাৎ অনুসারী শিল্প গড়ে উঠবে। তাতে সময় একদিকে অনেকটাই বাঁচবে, পাশাপাশি উৎপাদন অনেক গুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই অনুসারী শিল্প গড়ে উঠলে আগামী দিনে এখানে নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও মনে করা হচ্ছে