কৃষিকাজে যেভাবে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের ব্যবহার বাড়ছে, তা ক্রমশই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষি বিজ্ঞানী শুরু করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে। এই সমস্ত রাসায়নিক শুধু মাটির স্বাস্থ্যেরই চরম ক্ষতিই করছে না, উপরন্তু মানবজীবনেও এর ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যাচ্ছে । কৃষি বিশেষজ্ঞরা বারবার কৃষকদের জৈব এবং প্রাকৃতিক কৃষিকাজ করার জন্য বলছেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষিকাজ করলে ফসলের ফলনও ভালো হবে।
উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের নিয়ামতপুরের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে নিযুক্ত কৃষি বিশেষজ্ঞ ডা. এন সি ত্রিপাঠী বলেন, যদি কৃষকরা ফসল থেকে ভালো উৎপাদন পেতে চান, তাহলে তাঁরা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে দেশীয় পদ্ধতিও অবলম্বন করতে পারেন। তিনি জানিয়েছেন, রাসায়নিক ব্যবহার না করে ধানের জন্য সরিষার খোল ব্যবহার করলে তার ফলাফল চমকে দেবে। পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত সরিষার খোল ধান গাছের জন্যও ভীষণ উপকারী। এটি ব্যবহারে একদিকে যেমন ধানের কলির সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় অন্যদিকে ফসলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমে।
কীভাবে সরিষার খোল ব্যবহার করবেন?
সরিষার খোল ব্যবহার করার আগে প্রথমে খেতের মধ্যে জল ভরতে হবে। এরপরে ৫ থেকে ৭ কেজি সরিষার খোল নিতে হবে এবং তা মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এবার সেই সরিষার খোল গোটা ফসলের খেত জুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। এটা করার ফলে ধান গাছের বাড়-বৃদ্ধি আরও ত্বরাণ্বিত হবে। আর ধান গাছ রোপণ করার আগে এই সরিষার খোল জমিতে প্রয়োগ করতে পারেন কৃষকরা।
সরিষার খোল আসলে চাষবাসে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উপস্থিত থাকে একাধিক পুষ্টি উপাদান বা নিউট্রিয়েন্টস। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকে নাইট্রোজেন, বোরন, সালফার, জিঙ্ক, ফসফরাস এবং পটাশের মতো প্রধান এবং জরুরি নিউট্রিয়েন্টস।
ফসল কিংবা গাছের বাড়-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই সমস্ত জরুরি পুষ্টি উপাদান। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, সরিষার খোল ফসল চাষের জন্য ব্যবহার করা হলে ফসল দ্রুত বৃদ্ধি পাবে উপকৃত হবেন কৃষকরা।