মাত্র ২ দিনের লড়াই,তাতেই বাস্তুচ্যুত দু’দেশের ৮০,০০০-রও বেশি মানুষ, মৃত কমপক্ষে ১৬। দীর্ঘদিনের বিবাদের জেরে তৈরি হওয়া থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষে গোটা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া জুড়ে যুদ্ধের দামামা বেজে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। আর এর জেরেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুক্রবার একটি জরুরি বৈঠক ডাকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
নিউ ইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত ছিয়া কেও জানান, “আমরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।” তিনি জানান, “ থাইল্যান্ডের তুলনায় আমাদের সেনাবাহিনী ছোট এবং কম সজ্জিত।” যুদ্ধ থামানোর আর্জির পাশাপাশি যুদ্ধ শুরুর দায় নিতে চায়নি কম্বোডিয়া। ছিয়া কেও থাইল্যান্ডের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সংঘর্ষ শুরু করার জন্য কম্বোডিয়া দায়ী নয়।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
খামের রাজবংশের সময়কার ‘প্রসাত তা মুয়েন থম’ মন্দির এলাকার দখল নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই বিবাদ জারি দুই দেশের। এটি থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব সুরিন প্রদেশে অবস্থিত একটি মন্দির। কম্বোডিয়ার দাবি, এই মন্দিরের মালিকানা তাদের। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের দাবি, এই মন্দিরের সীমানা তাদেরই অধীনে। গত বৃহস্পতিবার নতুন করে উত্তেজনা বাড়ার পর সংঘর্ষের জেরে থাইল্যান্ড থেকে ৫৮,০০০ ও কম্বোডিয়া থেকে ২৩,০০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। দু’দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষজন প্রাণে বাঁচতে মালপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গেছেন।
থাই সেনাবাহিনীর মতে, শুক্রবার ভোর ৪টা নাগাদ তিনটি ফ্রন্টে কম্বোডিয়ান বাহিনী মর্টার, ফিল্ড আর্টিলারি ও রকেট লঞ্চার ব্যবহার করে আক্রমণ চালায়। থাই বাহিনীও উপযুক্ত পাল্টা হামলা চালায়। থাইল্যান্ডের অভিযোগ কম্বোডিয়া হাসপাতাল ও পেট্রল পাম্প-সহ নানা জরুরি প্রয়োজনের পরিকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে। এদিকে কম্বোডিয়ার গোলাবর্ষণের জবাবে থাই সেনা এফ১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে রেখেছে। যদিও উভয় পক্ষই একে অপরকে প্রথম হামলার জন্য দায়ী করছে।
আরও পড়ুন
দু’দেশের এই সংঘর্ষ থামাতে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ও আসিয়ানের তরফে সংযম ও কূটনৈতিক সমাধানের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধের তীব্রতা ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই কূটনৈতিক আলোচনার জানালা বন্ধ হয়ে আসছে। কম্বোডিয়া সংঘর্ষবিরতি চাইলেও থাইল্যান্ডের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নিকোর্নদেজ বালানকুরা জানিয়েছেন, তাঁরা দ্বিপাক্ষিকভাবে বা মালয়েশিয়ার মাধ্যমে আলোচনায় আগ্রহী। তবে এখনও নম পেন থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।