রাজ্যজুড়ে অসুর পুজো বাড়ছে। মাতৃপক্ষের মহানবমীর দিন রাজ্যের আদিবাসীদের একাংশ এই পুজোর আয়োজন করে। মুলত মহিষাসুর হত্যার স্মরণে এই পুজো হয়। বিগত বছর রাজ্যে প্রায় দেড় হাজার অসুর পুজো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন, মূল নিবাসী পার্টির কর্মকর্তা ও আম্বেদকর সাহিত্যিক পীযূষ গায়েন। তিনি জানান, প্রতি বছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, যেখানে মূলত মূল নিবাসীদের বসবাস বেশি, সেই সব এলাকাতে এর প্রসার ঘটছে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে চলতি বছরে এই পুজোর সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তিনি জানান, আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে হুদুড় দুর্গার পুজো করে আসছেন। তার সঙ্গে এর কিছুটা পার্থক্য আছে। সেখানে অসুরের পুজো করা হয়। কিন্তু অসুর পুজো, মুলত অসুর নিধন দিবস হিসাবে পালিত হয়। অসুরকে ওইভাবে পুজো করা হয় না। এর মূল বিষয় হল, অসুর স্মরণ ও আদিবাসী জীবন চর্চা সম্পর্কে আলোচনা। আদিবাসী সঙ্গীত, নৃত্য পরিবেশনা। অন্য কোনও আচার অনুষ্ঠান নেই।
পীযূষবাবু জানান, এই রাজ্যে অসুর পুজোর প্রচলন হয় পুরুলিয়া জেলাতে, অজিত প্রসাদ হেমব্রমের হাত ধরে। ২০১১ সালে। তার পর তা ব্যাপ্তি লাভ করে প্রয়াত চরণ বেসরার চেষ্টায়। এখন মালদায় প্রায় ৬০০ এর বেশি অসুর পুজো হয়। সেই সঙ্গে একাদশীর দিন মালদায় দুটি বড় অনুষ্ঠান হয়। একটি গাজলে। অন্যটি হাবিবপুরে। যেখানে জেলার অসুর পুজো আয়োজকরা সমবেত হন। হাজির হন বহু মানুষ। সেই মেলাতে গোষ্ঠীর মোড়লদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে চলে আলোচনা, আদিবাসী গান, নাচ ও সাহিত্যের আসর। তার আগে, মণ্ডপে রাখা অসুরের ছবিতে ফুল দেওয়া হয়।
তিনি জানান, পুরুলিয়া, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, ঝাড়্গ্রাম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুরে অসুর পুজোর সংখ্যা বেশি। তবে পিছিয়ে নেই, দুই ২৪ পরগনা।
পীযূষবাবু জানান, আমাদের জলপাইগুড়িতে অসুর পদবির মানুষ রয়েছেন। তাঁরা নবমীর দিন ঘর থেকে বের হন না। কারণ ওই দিন মহিষাসুর বধ হয়ে ছিলেন। আমাদের পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও অসুর পদবির মানুষ রয়েছেন।