পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার ৩ জঙ্গি সোমবার ভারতীয় সেনার গুলিতে মারা গিয়েছে। মঙ্গলবার লোকসভায় এই কথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, এই তিন জঙ্গি পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ‘অপারেশন মহাদেব’ – এ আমাদের সেনাবাহিনী তাদের নিকেশ করেছে। যদিও এই বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
অমিত শাহ জানান, এই তিনজনের মধ্যে একজনের নাম সুলেমান মুসা। মুসা লস্কর-ই-তৈবার অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার এবং পহেলগাঁও কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। পহেলগাঁওয়ের পাশাপাশি শোনমার্গের কাছে গান্দেরবালে জঙ্গি হামলার সঙ্গেও মুসার যোগাযোগ ছিল। গতবছর অক্টোবর মাসে সেখানে জঙ্গিদের হাতে কয়েকজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া জিবরা ও হামজা আফগানি নামে আরও দুই জঙ্গিকে খতম করেছে সেনা। এই দু’জনও লস্করের অন্যতম শীর্ষ জঙ্গি।
এই জঙ্গিরাই যে পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, তা কীভাবে নিশ্চিত হওয়া গেল সেটাও জানিয়েছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, জঙ্গিদের খাবার ও জল দিয়ে সাহায্য করেছিল এমন দুই ব্যক্তিকে আগেই আটক করেছিল এনআইএ। এদের নাম পারভেজ আহমেদ এবং বশির আহমেদ। তিন জঙ্গির দেহ শ্রীনগরে নিয়ে আসা হলে আটক ব্যক্তিরা তাদের শনাক্ত করে। কিন্তু শুধু এতেই সন্তুষ্ট হয়নি সরকার।জঙ্গিদের থেকে উদ্ধার হওয়া এম-৯ এবং একে-৪৭ রাইফেল আর বুলেটের খোল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য চণ্ডীগড়ের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। নাশকতার দিন ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা বুলেটের খোলের সঙ্গে সোমবার উদ্ধার হওয়া বুলেটের খোলগুলি মিলে যায়। উদ্ধার হওয়া রাইফেল গুলি থেকেই নাশকতার দিন গুলি চালানো হয়েছিল, তেমনি জানানো হয় রিপোর্টে। তারপরেই সরকার নিশ্চিত হয় যে, পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত তিন জঙ্গিই নিকেশ হয়েছে ‘অপারেশন মহাদেব’- এ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, হামলার খবর পাওয়া মাত্র কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জম্মু কাশ্মীরের সমস্ত রকমের নিরাপত্তা বাহিনীর অধিকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে জঙ্গিরা কোনও ৃভাবেই দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে। সীমান্তে নিশ্ছিদ্র নজরদারির পাশাপাশি খোঁজ শুরু হয় লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের। গোপন সূত্রে জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে সোমবার সকালে শ্রীনগরের কাছে দাচিগামের ঘন জঙ্গলে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও সিআরপিএফকে নিয়ে যৌথ অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।
অমিত শাহ আরও বলেন, ২২ এপ্রিল জঙ্গি হামলার পরই বিকেল পাঁচটা নাগাদ শ্রীনগরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। “ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আমি এক মহিলার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম যিনি বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় স্বামীকে হারিয়েছেন। আমি ওই দৃশ্য কখনও ভুলতে পারব না।” স্বজনহারা পরিবারদের প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্তা, যারা সন্ত্রাসবাদীদের পাঠিয়েছিলাম, ‘অপারেশন সিন্দুর’ তাদের শায়েস্তা করেছে। আর সেদিনের হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছিল, ‘অপারেশন মহাদেব’ -এর মাধ্যমে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের হত্যা করেছে।