জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের দাবিতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখল জুলাই যোদ্ধারা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর গণমাধ্যমকে একসময় জানান যে, শাহবাগ ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই সনদের খসড়া তৈরির দায়িত্বে থাকলেও আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এটি চূড়ান্ত করার কথা ছিল। তবে জানা যাচ্ছে, এখনও সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নানা বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় আলোচনা শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলে শাহবাগ ও আশপাশের রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
কিন্তু এই জুলাই সনদ আসলে কী? গত বছর পাঁচই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩১ ডিসেম্বর জুলাই প্রোক্লেমেশন বা গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। যদিও পরে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলা হয়। সরকারের আশ্বাসে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে শিক্ষার্থীরা।
গত ছয়ই জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস জানান, “জুলাই সনদ হল একটি প্রতিশ্রুতি। একটা জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে রাজনৈতিক দলগুলো যে ক’টিতে একমত হয়েছে, তার তালিকা থাকবে এই সনদে।”
গুরুত্বপূর্ণ সব প্রস্তাবে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সহমতের ভিত্তিতেই তৈরি হওয়ার কথা জুলাই সনদ। এদিকে সময় হয়ে গেলেও সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ কয়েকটি দল জুলাই সনদের বর্তমান খসড়ার কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান আপত্তির বিষয় হল, খসড়ায় বলা হয়েছে—সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর দু- বছরের মধ্যে সংস্কারের কাজ করতে হবে। দলগুলোর দাবি, জুলাই সনদ আইনগত কাঠামোর আওতায় আনতে হবে, না হলে এই সংস্কার প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই সময়ে অন্যতম আলোচিত বিষয় এই ঘোষণাপত্র। দলগুলোর সবুজ সংকেত পেলেই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতেই ঘোষণা করা হতে পারে জুলাই ঘোষণাপত্র।
Leave a comment
Leave a comment