২০২৪ সালের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএম বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত। এমনটাই দাবি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের।
মহারাষ্ট্রের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের উদ্যোগে
সংশ্লিষ্ট দশটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বা দলীয় প্রতিনিধি বা নির্বাচনী এজেন্টদের সামনে রেখে দশটি বিধানসভা কেন্দ্রের ইভিএম-এর ডায়াগনস্টিক টেস্টের পর কোনও ত্রুটি ধরা না পড়ায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। একটি বিবৃতিতে কমিশন জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের দশটি বিধানসভা কেন্দ্রের ইভিএমের ৪৮টি ব্যালট ইউনিট, ৩১টি কন্ট্রোল ইউনিট, এবং ৩১টি ভিভিপ্যাট ডায়াগনস্টিক টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে। যেখানে মহারাষ্ট্রের দশটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রার্থী অথবা দলীয় প্রতিনিধি বা নির্বাচনী এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। ডায়াগনস্টিক টেস্টে মূলত পরীক্ষা করা হয় ইভিএমগুলির মেমোরি অথবা মাইক্রোকন্ট্রোলার বার্ন হয়ে গিয়েছে কি না। ইভিএম প্রস্তুতকারক সংস্থা ইসিআইএল-এর ইঞ্জিনিয়ারদের উপস্থিতিতে এই ডায়াগনস্টিক টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। ডায়াগনস্টিক টেস্ট পাশ করার পর সংশ্লিষ্ট নির্মাতা সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা ইভিএমগুলোতে ডায়াগনস্টিক টেস্ট পাশ করেছে এই ধরনের সার্টিফিকেট লিখে দেন। তারপর উপস্থিত নির্বাচনী প্রার্থীদের অনুরোধ মেনে মক পোল অনুষ্ঠিত হয়। সেই মক পোলের ক্ষেত্রে কন্ট্রোল ইউনিটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট এর স্লিপ মিলিয়ে দেখা হয়। সেখানে কোনওরকম ত্রুটি বিচ্যুতি ধরা না পড়ায় সংশ্লিষ্ট ইভিএমগুলি ত্রুটিমুক্ত বলে শংসাপত্র দেয় ইভিএম নির্মাতা সংস্থা ইসিআইএল। আর ইভিএম নির্মাতার সংস্থার এই শংসাপত্রের ভিত্তিতেই গত বছরের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ইভিএম এর ত্রুটি নিয়ে বিজিত রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা নস্যাৎ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত, গতবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের পরপরই ইভিএম-এর ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে প্রথম সোচ্চার হয়েছিলেন জাতীয় কংগ্রেস সাংসদ তথা শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী। এরপরই একে একে এই ইসুতে সোচ্চার হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এম কে স্ট্যালিন সহ বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়ার একাধিক নেতা। মহারাষ্ট্রের পর দিল্লি বিধানসভা, নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই ইস্যুতে সোচ্চার হয় বিরোধীরা। যদিও বিরোধী দলগুলির দাবিকে নিজস্ব যুক্তির নিরিখে প্রতিবারই খণ্ডন করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এরপর মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিজিত আটটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রার্থীদের পক্ষ থেকে ইভিএমের ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ করা হয় এবং নির্বাচনী বিধি মেনে ইভিএমগুলোর পরীক্ষা বা যাচাইয়ের আবেদন করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মহারাষ্ট্রের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দপ্তরের উদ্যোগে দশটি বিধানসভা কেন্দ্রের ইভিএম নিয়ে ডায়াগনস্টিক টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়। এই ডায়াগনস্টিক টেস্টে ইভিএম গুলি উত্তীর্ণ হওয়ায় মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা এবং দক্ষতা নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যে প্রশ্ন তুলেছিল তার যোগ্য জবাব মিলেছে বলে মনে করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
Leave a comment
Leave a comment