দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়ার পদ্ধতি নিয়ে ফের চরম অসন্তোষ প্রকাশ করল রাজ্য প্রশাসন। লাগাতার বৃষ্টির ফলে যখন নিম্ন দামোদর বেসিন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে, তখন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই জল ছাড়ছে ডিভিসি — এমনই অভিযোগ তুলে ফের একবার ‘প্রতিবাদ চিঠি’ পাঠানো হয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে। নবান্নের নির্দেশে সেচ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এই চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ” দামোদরের নিচু অঞ্চল ইতিমধ্যেই প্লাবিত। এর মধ্যে পরিকল্পনাহীনভাবে ডিভিসির জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের একাধিক জেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।” আগামী ৩-৪ দিনে ঝাড়খণ্ড ও বিহারে ডিভিসির উচ্চ অববাহিকা এলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ, ” যদি এমন পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা না করে জল ছাড়া হয়, তাহলে বাঁকুড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান সহ একাধিক জেলায় ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পারে।” তাই রাজ্যের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, জল ছাড়ার আগে যেন ডিভিসি রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিকল্পনা করে।
বস্তুত, ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের চিঠি কোনও নতুন বিষয় নয়। ফি বছর বর্ষার মরশুমে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ডিভিসি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে লাগাতার এ ধরনের চিঠি দেওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীকেও একাধিকবার ডিভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী জলাধারগুলির সংস্কারের আবেদন রাজ্যের পক্ষ থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। বন্যা অথবা প্লাবন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও একাধিকবার ডিভিসির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে রাজ্য সেচ দপ্তর অথবা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে কিংবা নীতি আয়োগ থেকে অর্থ কমিশনের বৈঠকেও। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী এই সমস্যার কোন সমাধান হয়নি। প্রতিবছর বর্ষার মরশুমে ডিভিসের উচ্চ অববাহিকা এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত হলেই তার ফল ভোগ করতে হয়।নিম্ন অববাহিকার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে। নদীমাতৃক রাজ্য হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের উপর জলধারার এই চাপ আরও বাড়তি সমস্যা তৈরি করে প্রতি বছর। সেই কারণেই ঝাড়খণ্ড ও বিহারের অববাহিকাএলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বনের জন্য ফের দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দিল রাজ্য সরকার।
