কলকাতা মেট্রো সম্প্রসারণে রেল দপ্তরের পরিকল্পনা রূপায়ণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের অসহযোগিতার কারণেই প্রস্তাবিত মোট ৫৬ কিলোমিটার মেট্রো সম্প্রসারণের মধ্যে ২০ কিলোমিটারের কাজ থমকে রয়েছে বলে ফের দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। গত ২৩ জুলাই লোকসভায় দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায় রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে কলকাতা মেট্রোর জন্য গত পাঁচ বছরে কত বরাদ্দ হয়েছে তা জানতে চান। পরে লিখিত উত্তরে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে কলকাতা মেট্রো প্লাটফর্ম, স্টেশন, শেড এবং রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। একইসঙ্গে রেলমন্ত্রী দাবি করেছেন, প্রস্তাবিত ৫৬ কিলোমিটার পর্যন্ত মেট্রোপথ সম্প্রসারণের মধ্যে ২০ কিলোমিটারের কাজ থমকে রয়েছে জমি অধিগ্রহণ ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে। লিখিত উত্তরে রেলমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ১৯৭২ সাল থেকে যে কলকাতা মেট্রোর কাজ শুরু হয়েছে এখনও পর্যন্ত মোট ৬৯ কিলোমিটার মেট্রোপথে রেললাইন পাতা হয়েছে। নিজের লিখিত উত্তরে কংগ্রেস ও ইউপিএ জমানার তুলনা টেনে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯৭২ থেকে ২০২৫ এই ৫৩ বছরে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোয় কলকাতা ও শহরতলিতে মেট্রোপথ হয়েছে ২৮ কিলোমিটার। যার জন্য রেল বাজেটে বরাদ্দ হয়েছিল ৫,৯৮১ কোটি টাকা। আর ২০১৪ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত মোদি জমানায় কলকাতা মেট্রোপথের কাজ হয়েছে ৪১ কিলোমিটার। বাজেট বরাদ্দ হয়েছে ২৫ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। তথ্যের মাধ্যমে রেলমন্ত্রী তৃণমূল সাংসদকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে কলকাতা মেট্রোর উন্নয়নে কংগ্রেস অথবা ইউপিএ জমানার থেকে মোদি জমানা অনেক বেশি এগিয়ে বা সক্রিয়। উল্লেখযোগ্য, বাইপাস সংলগ্ন চিংড়িঘাটার কাছে সামান্য একটু অংশে জমি জটের কারণে থমকে রয়েছে গড়িয়া-এয়ারপোর্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ। কিছুটা অংশে মেট্রো চলাচল শুরু হলেও বাকি অংশে মেট্রো চালু করা যায়নি। অন্যদিকে, গঙ্গার তলদেশ দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ যাত্রাপথে বউবাজারে ভুমিধসের কারণে মেট্রো পথের ক্ষত সারিয়ে সিআরএস-এর অনুমতি সত্ত্বেও এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি হাওড়া সেক্টর ফাইভ মেট্রো চলাচল। হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করলেও এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ এই অংশে এখনও চালু হয়নি মেট্রো। যদিও কবে এই মেট্রো চলাচল শুরু হবে তার হদিশ মেলেনি রেলমন্ত্রীর বক্তব্যে।