ছত্তিশগড়ে মানব পাচার ও ধর্মান্তরের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন কেরলের দুই সন্ন্যাসিনী ও এক যুবক! অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন তাঁরা ।
কেরলের দুই খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী এবং এক আদিবাসী যুবককে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে ছত্তিশগড়ের একটি বিশেষ এনআইএ আদালত। মানব পাচার ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরের অভিযোগে এই তিনজনকে গত ২৫ জুলাই দুর্গ রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদিন জামিন পান সিস্টার প্রীতি মেরি এবং বন্দনা ফ্রান্সিস, যাঁরা অ্যাসিসি সিস্টারস অফ মেরি ইম্যাকুলেট-এর সদস্যা, এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা ছত্তিশগড়ের আদিবাসী যুবক সুখমান মাণ্ডবী। আদালত তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং দুজন জামিনদার দেওয়ার শর্তে জামিন মঞ্জুর করেছে। এছাড়া তাঁদের পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
অভিযোগ উঠেছিল, তাঁরা তিনজন আদিবাসী কিশোরীকে ধর্মান্তরের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে সন্ন্যাসিনীদের পক্ষের আইনজীবী অমৃত দাস আদালতে জানান, ওই তিন তরুণীর পরিবার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, তাঁদের মেয়েরা অনেক বছর ধরে খ্রিস্টান ধর্ম পালন করছে এবং নিজেদের ইচ্ছায় আগ্রায় কাজের জন্য যাচ্ছিল। তাই এই মামলায় মানব পাচার বা জোর করে ধর্মান্তরের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তিনি এটিকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ এফআইআর বলে আখ্যা দেন।
এর আগে দুর্গের সেশনস কোর্ট এই মামলার জামিনের শুনানি শুনতে অপারগ বলে জানিয়েছিল। সেকথা জানিয়ে অভিযুক্তদের বিলাসপুরের এনআইএ আদালতে যেতে বলেছিল সেশনস কোর্ট। এই ঘটনায় কেরলে ব্যাপক প্রতিবাদ হয় এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ জানায়। সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাত বলেন, ‘এটি আদিবাসী সমাজের একটি বড় বিজয়।’ তিনি বজরং দল ও হিন্দু বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
দুই খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী এবং ওই আদিবাসী যুবকের জামিনের পর সিপিআইএম সাংসদ জন ব্রিটাস একে ‘সংবিধানের বিজয়’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, তাঁরা এফআইআর বাতিলের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। কেরলের বিজেপি সভাপতি রাজীব চন্দ্রশেখরও মন্তব্য করেন যে, এই গ্রেফতার ‘একটি ভুল বোঝাবুঝি’-র ফল। তাই জামিনে আপত্তি করবে না ছত্তিশগড় সরকার। জামিন মঞ্জুর হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অভিযুক্ত ও তাঁদের সমর্থকেরা।
