জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হিমাচল প্রদেশ কি হারিয়ে যাবে ভারতের মানচিত্র থেকে? আশঙ্কা খোদ দেশের শীর্ষ আদালতের। হিমাচল নিয়ে একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মাধবনের বেঞ্চ। হিমাচল প্রদেশে অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও তা নিয়ে প্রশাসনিক উদাসিনতার তীব্র সমালোচনা করে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ,
“পরিস্থিতির বদল না হলে গোটা হিমাচল হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।”
বস্তুত, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যটনকে মসৃণ করতে গত কয়েক বছরে হিমাচল প্রদেশে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুতগতিতে বেড়েছে। পর্যটনই আয়ের মূল উৎস হওয়ায় উন্নয়নের চহিদাও যথেষ্টই। কিন্তু আনিয়ন্ত্রিতভাবে উন্নয়নের জন্য পাহাড়ি রাজ্যের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে আদালত। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয় মানুষের তৈরি দুর্যোগে রোজই একটু একটু করে ধ্বংস হচ্ছে হিমালয়ের এই শৈল রাজ্য। অপরিকল্পিত উন্নয়নের জেরে লাগাতার ভূমিধস, বাড়িঘর ধ্বংস হওয়া, রাস্তা ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটছে। লাগাতার গাছ কাটার পাশাপাশি বহুতল নির্মাণ, হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্ট, চার লেন হাইওয়ে ইত্যাদি প্রকল্পের জন্য পাহাড়ি ভূভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই কোনও উন্নয়ন প্রকল্পের আগে ভূতত্ত্ববিদ, পরিবেশবিদ ও স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে আদালত। তাই এই পাহাড়ি রাজ্যকে বাঁচাতে অবিলম্বে সঠিক ও দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য বিচারপতিদের।
সম্প্রতি হিমাচল সরকার কিছু এলাকাকে সবুজ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে নির্মাণ কাজ নিষিদ্ধ করেছে। হিমাচল হাইকোর্টের মামলা দায়ের করা হয়। হিমাচ ল হাইকোর্ট মামলায় হস্তক্ষেপ করতে রাজি না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মামলাকারীরা। সুপ্রিম কোর্টের মূল বক্তব্য,
” রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে আমরা এটাই বোঝাতে চাইছি যে পরিবেশ বাস্তুতন্ত্রের বিনিময়ে রাজস্ব আয় করা উচিত নয়। যদি এই পরিস্থিতি আগামী দিনে অব্যাহত থাকে তাহলে অচিরে ই এই পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল ভারতবর্ষের মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, তেমনটা যেন না হয়।”