লোকেশ কনাগরাজ পরিচালিত ‘কুলি’ সিনেমাটি ঘোষণার পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। কারণ, এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্ত। এবার সেই উত্তেজনা আরও একধাপ বেড়ে গেল, কারণ ছবিটি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (CBFC)-এর থেকে ‘এ’ সার্টিফিকেট পেয়েছে। এর মানে, বহুদিন পর রজনীকান্তের কোনও ছবি শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মুক্তি পাচ্ছে। লোকেশ তাঁর স্টাইলের মতোই আপসহীন, নির্ভেজাল অ্যাকশন পরিবেশনের রাস্তাতেই হাঁটছেন। ফলে ‘কুলি’-তে রজনীর একেবারে ভিন্ন, রগরগে অবতারে প্রত্যাবর্তন দেখতে চলেছেন দর্শকরা।
‘সান পিকচার্স’-এর ব্যানারে নির্মিত এই ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ১৪ আগস্ট, তামিল, তেলুগু, কন্নড় এবং হিন্দি ভাষায়। এতে রজনীকান্তকে দেখা যাবে ‘দেবা’ নামে এক চরিত্রে, যাকে লোকেশ বর্ণনা করেছেন ‘অকপট, নির্মম, নিচুতলার শ্রমজীবী সমাজের প্রতিনিধি’ হিসেবে। ছবির প্রোমোতে যেভাবে অন্ধকার, কঠিন ভিজ্যুয়াল ফুটেজ তুলে ধরা হয়েছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে, এই ছবি রজনীকান্তের কেরিয়ারের অন্যতম ‘হিংস্র’ অ্যাকশন ফিল্ম হতে চলেছে।
ছবিতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে একাধিক তারকাকে দেখা যাবে । তেলুগু অভিনেতা নাগার্জুনা ‘সায়মন’, সত্যরাজ ‘রাজশেখর’, উপেন্দ্র ‘কালীশা’, শ্রুতি হাসান ‘প্রীতি’ এবং মালয়লম অভিনেতা সৌবিন শাহির ‘দয়াল’ নামের চরিত্রে রয়েছেন। দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে, আমির খানকেও দেখা যাবে ‘দাহা’ চরিত্রে, যা বহু দশক পর কোনও দক্ষিণী ছবিতে তাঁর প্রত্যাবর্তনের সূচক।
এই ছবিতে রাজনীতির নস্টালজিক ফিউশন রয়েছে। ৩৮ বছর পর রজনীকান্তের সঙ্গে সত্যরাজের যুগলবন্দি আবার পর্দায় ফিরছে, সেই সঙ্গে ‘আতঙ্ক হি আতঙ্ক’ ছবির প্রায় ২৯ বছর পর রজনী-আমিরের রি-ইউনিয়ন ঘটতে চলেছে। তবে লোকেশ কেবল নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন হন না, বরং তাঁর লক্ষ্য হচ্ছে অ্যাকশন ঘরানার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করা।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে ‘কুলির টিম বেশ শক্তিশালী। ‘জাল্লিকাট্টু’ এবং ‘লিও’-খ্যাত গিরিশ গঙ্গাধরণ আছেন সিনেমাটোগ্রাফি-তে, ফিলোমিন রাজ আছেন এডিটিং-এ। অ্যানবারিভ ডুয়ো পরিচালনা করছেন অ্যাকশন সিকোয়েন্সগুলো, যা ছবির অন্ধকার ও হিংসাত্মক টোনকে উপযুক্তভাবে তুলে ধরবে। লোকেশ এবং চন্দ্রু অনবঝগন মিলিতভাবে সংলাপ ও অতিরিক্ত চিত্রনাট্য রচনা করেছেন।
যদিও ছবির প্লট এখনও গোপন রাখা হয়েছে, সূত্রের দাবি, ছবির গল্প ডকইয়ার্ড মাফিয়াদের যুদ্ধ, বিশ্বাসঘাতকতা ও শ্রেণিসংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠেছে, যেখানে ‘দেবা’ এক সময়ের কুলি থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ড এনফোর্সারে পরিণত হয়। লোকেশের ‘ইউনিভার্স কানেকশন’ থাকাটাই এখন প্রত্যাশা। ফলে দর্শকদের মনে প্রশ্ন—‘কুলি’ কি তবে LCU-এর অংশ?
যাই হোক, একথা নিশ্চিত, রজনীকান্তের এই কামব্যাক ছবিটি কোনওরকম ‘সেফ প্লে’ নয়। স্বাধীনতা দিবসের সপ্তাহান্তে ‘কুলি’ নিয়ে রজনী ফিরছেন তাঁর অন্যতম বেপরোয়া রূপে।