বিভিন্ন জেলায় অনলাইনে একের পর এক ভুয়ো বা অস্তিত্বহীন ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত করার নেপথ্যে কারা? গতকাল( শনিবার) দুই জেলার ইআরও-কে তলব করা ছাড়াও এর আগে আরও তিনজন ইআরও-কে একই অভিযোগে তলব করেছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতর। প্রাথমিকভাবে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় এই অবৈধ কাজকর্ম করা হচ্ছে বলে মনে করছেন কমিশনের কর্তারা। তবে সে ক্ষেত্রে ‘ নাটের গুরু ‘-র ভূমিকায় যে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের নিয়োগকারী এজেন্সিগুলি তা নিয়ে মোটামুটি একপ্রকার নিশ্চিত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
আর সেকারণেই যে জেলার ইআরওদের সিইও দপ্তরে তলব করা হয়েছিল সেই জেলার জেলাশাসক বা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের কাছে গত পাঁচ বছরে সংশ্লিষ্ট জেলায় কোন কোন এজেন্সি কাজ করেছে তার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
তবে এই প্রক্রিয়ায় ইআরও-দের দায় অস্বীকার করা যায় না বলেও মত আধিকারিকদের একাংশের। মূলত ভোটার তালিকার মূল সার্ভারে নাম রেজিস্টার্ড করতে হলে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ইআরও-দের আইডি প্রয়োজন। তাহলে সরাসরি ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা যদি ওই সার্ভারে নাম নথিভুক্ত করেন সেক্ষেত্রে ইআরও-র আইডি ছাড়া তা সম্ভব নয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ইআরও এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটর বা তাদের নিয়োগকারী এজেন্সির সঙ্গে একটা যোগসাজশ রয়েছে বলে সন্দেহ কমিশনের।
গতকাল নন্দকুমার এবং রাজারহাট- গোপালপুর এই দুই ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে তলব করেছিল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
সূত্রের খবর, বৈঠকে দুই ইআরও স্বীকার করেন যে অস্তিত্বহীন যে ভোটারদের নাম রেজিস্টার্ড হয়েছে তাদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বিএলও -দের কাজে লাগানো হয়নি। অর্থাৎ সরাসরি মূল সার্ভারে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যেখানে অস্পষ্ট ও অবৈধ নথি দেখানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের অবৈধ কাজে সংশ্লিষ্ট ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও সংশ্লিষ্ট এজেন্সি অন্যতম অভিযুক্ত বলে মনে করছে কমিশন। আগামীকাল এই সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের কাছ থেকে গত পাঁচ বছরের এজেন্সিদের তালিকা পাওয়ার পর এবং ইআরও-দের বয়ান ও প্রাপ্ত নথিপত্রে ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। সেক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে পারে কমিশন।
সংশ্লিষ্ট এজেন্সি বা এজেন্সি গুলিকে ব্লক করা হতে পারে এবং একই সঙ্গে ইআরও-দের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও পদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছেন। নন্দকুমার ও রাজারহাট-গোপালপুর ছাড়াও এর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পূর্ব ইআরও-রা একই অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।