ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে ট্রাম্পের হাত ধরেই! ফের একবার এমনই দাবি করলেন মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, বিশ্বের আরও পাঁচটি বড় সংঘর্ষ তিনি বন্ধ করেছেন বলেও জানালেন। রবিবার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “চার্লামেন দ্য গড আমার অর্জন সম্পর্কে কিছুই জানেন না। আমি পাঁচটি যুদ্ধ বন্ধ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে কঙ্গো ও রুয়ান্ডার ৩১ বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, যেখানে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।”
উল্লেখ্য, দু’দিন আগে, নিউজম্যাক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প একই দাবি করেছিলেন।
এই দুই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, “ ভারত-পাকিস্তান নিয়ে কিছুই জানতেন না তিনি, জানতেন না ইরানের পারমাণবিক শক্তি ধ্বংসের কথা, কিংবা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, অথবা বিশ্বের সেরা অর্থনীতি তৈরি করার কথা।” শনিবার ‘নিউজম্যাক্স’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেন, “আমি বহু যুদ্ধ থামিয়েছি। প্রতি মাসে একটা করে যুদ্ধ থামিয়েছি। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধও আমি বন্ধ করেছি। তারা পারমাণবিক যুদ্ধের পথে ছিল।”
তিনি জানান, থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া, কঙ্গো-রুয়ান্ডা সহ একাধিক সংঘর্ষে তিনি বাণিজ্যিক চাপ সৃষ্টি করে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি ওদের বললাম, তোমরা যুদ্ধ করো, কিন্তু আমরা কোনও ট্রেড ডিল করব না। এরপরই তারা যুদ্ধ বন্ধ করল।” হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটও ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন করে বলেন, “ট্রাম্প থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া, ইজরায়েল-ইরান, রুয়ান্ডা-কঙ্গো, ভারত-পাকিস্তান, সার্বিয়া-কসোভো, মিশর-ইথিওপিয়া এই সব সংঘর্ষ বন্ধ করেছেন। তিনি প্রতি মাসে একটি করে শান্তিচুক্তি বা যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করেছেন।”
তবে ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবিকে পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর রাজ্যসভায় স্পষ্ট করে বলেন, “ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছিল না। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু হয়। ওই সময় থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত মোদি-ট্রাম্পের মধ্যে কোনও ফোনালাপ হয়নি।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সংসদে জানিয়েছেন, “কোনও বিদেশি নেতা ভারতকে যুদ্ধ থামাতে বলেননি। ভারত নিজস্ব সিদ্ধান্তেই এগিয়েছে।” ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধ বন্ধের দাবিকে ঘিরে ফের বিতর্ক আন্তর্জাতিক মহলে।
রাজনীতিবিদরা অবশ্য বলছেন, ট্রাম্প বারবার যুদ্ধ থামানোর যে ঢাক পেটাচ্ছেন, তার পিছনে একটাই উদ্দেশ্য। সেটা হল নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করা। এভাবেই তিনি নোবেল কমিটিকে প্রভাবিত করতে চাইছেন।