ইউক্রেন যুদ্ধ তো ছিলই, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘মৃত অর্থনীতি’ তোপ।মস্কোর সঙ্গে আমেরিকার উত্তেজনা চরমে। এমন পরিস্থিতিতেই উত্তেজনা প্রশমনে তাঁর বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে আগামী সপ্তাহে রাশিয়া সফরে পাঠাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় উইটকফ আগামী বুধবার বা বৃহস্পতিবার রাশিয়া যাবেন।’
কিছুদিন আগেই ইউক্রেন যুদ্ধের বিরতির জন্য রাশিয়াকে আল্টিমেটাম দিয়ে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।জুলাই-এর শেষে তিনি রাশিয়াকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন—যুদ্ধ বন্ধে এখন তাদের হাতে মাত্র ১০ দিন সময় রয়েছে। অন্যথায় রাশিয়ার ওপর কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ওয়াশিংটন। এর মধ্যে শুল্ক আরোপ থেকে শুরু করে ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’-এর মতো পদক্ষেপও রয়েছে তালিকায়।
সেই হিসেবে ট্রাম্পের সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা ৮ অগস্ট, শুক্রবার। অর্থাৎ তার আগেই সমাধান সুত্র খুঁজে বের করতে রাশিয়া পৌঁছে যাবেন ট্রাম্পের দূত।
কিন্তু এর মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে ট্রাম্প ভারতের পাশাপাশি রাশিয়াকেও মৃত অর্থনীতি বা ‘ডেড ইকোনমি’র দেশ বলে কটাক্ষ করায়। সেই খোঁচার পাল্টা জবাব দেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভ।
সেই ইস্যুতে আমেরিকাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ‘ডেড হ্যান্ড’ প্রসঙ্গ সামনে আনেন তিনি। ‘ডেড হ্যান্ড’ হল এমন একটি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক ব্যবস্থা, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি দেশের পারমাণবিক অস্ত্র চালু করে দিতে পারে।আর ভয়ংকর তথ্য হল, সারা বিশ্বের মধ্যে ওই অস্ত্র আছে শুধু পুতিনের হাতেই। সূত্রের খবর, রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ –এর জবাবে দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন ‘ওই অঞ্চলে’ মোতায়েন করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তিনি পরিষ্কার করেননি এগুলি পারমাণবিক-চালিত, না পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত । এদের অবস্থানও গোপন রেখেছে মার্কিন সেনাবাহিনী।
এই দুই ইস্যুতে এখন উত্তেজনা চরমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার।পুতিন-উইটকফ আলোচনা কী এই জটিলতার সমাধান করতে পারবে? ভ্লাদিমির পুতিন ইতিমধ্যেই মস্কোতে উইটকফের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয় নি।এবার ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই রাশিয়াকে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের পথে পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
উইটকফের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে ট্রাম্পের বার্তা, এমন একটা চুক্তি করা হোক যাতে মানুষের মৃত্যু বন্ধ হয়।
অন্যদিকে রাশিয়া শান্তি চাইলেও তাতে নানা শর্ত দিয়ে রেখেছেন পুতিন। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখল করা চারটি বিতর্কিত অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।যদিও এর কোনওটাই মানতে নারাজ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে ট্রাম্প আশাবাদী ছিলেন যে নিজের উদ্যোগে ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত থামিয়ে দেবেন। কিন্তু পুতিনের অনমনীয় অবস্থান দেখে আবারও রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে চাইছেন ট্রাম্প। এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।