নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কোনও সরকারি আধিকারিককে শাস্তি দেওয়া হবে না। সাফ জানিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, “কোন আইনে শাস্তি? এখন কি নির্বাচন আছে যে কমিশন শাস্তি দেবে?” রাজ্য সরকারের কোনও সরকারি আধিকারিককে শাস্তি দেওয়া হবে না। বুধবার গ্রামের সভা দেখে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশিকা জারি করে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দুই ইআরও এবং এইআরও কে সাসপেন্ড করে ফৌজদারি দন্ডবিধিতে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে। যদিও ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। এদিকে বুধবার দুপুরে, ঝাড়গ্রামে ভাষা মিছিল শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন রাজ্য সরকার ওই চার সরকারি পদাধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করবে না। এদিকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার শামিল হওয়ায় মুখ্যসচিবকে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট দিল্লিতে নির্বাচন সদনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ায় সেক্ষেত্রে মুখ্যসচিবের কী করণীয়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থেকেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালন করা যেমন মুখ্যসচিবের কর্তব্য, তেমনি মুখ্যসচিব কে কমিশন নির্দেশিত রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠাতেই হবে। অন্যথায় কমিশন ফের পদক্ষেপ করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। কমিশন সূত্রে আরও দাবি করা হয়েছে, শুধু নির্বাচনের সময়ই কমিশনের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ নয়, ভোটার তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে গোলমাল বা কারচুপি থাকলে তা নিয়ে কমিশন যেকোনও সময় পদক্ষেপ করতে পারে। কমিশন ও ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের মধ্যে অন্য কেউ নাক গলাতে পারে না। যেহেতু ভোটার তালিকা হল সাংবিধানিক অধিকার প্রদানের প্রাথমিক ভিত্তি, সেই তালিকায় যদি সংবিধানের রীতিনীতি বা নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়, তা ক্ষমার অযোগ্য বলেই মনে করে কমিশন। সব মিলিয়ে ভোটার তালিকায় কারচুপি এবং তা নিয়ে কমিশনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন দ্বন্দ্ব এবার সম্মুখ সমরে।