রাজ্য সিভিল সার্ভিসের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের শাস্তির নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানাল পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস এক্সিকিউটিভ অফিসার্স এসোসিয়েশন। সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সিভিল সার্ভিস আধিকারিককে যেভাবে শাস্তির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাতে তাদের সার্ভিস রেকর্ডে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এমন আশঙ্কা থেকেই নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনা করার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব যাতে হস্তক্ষেপ করেন সেই আবেদন জানানো হয়েছে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে।
গতকাল( ৫.০৮.২০২৫) দুই ডব্লিউবিসিএস এক্সিকিউটিভ অধাধিকারী সহ মোট চার সরকারি আধিকারিককে সাসপেন্ড করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে
এফআইআর করার নির্দেশিকা পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যত দ্রুত সম্ভব এই নির্দেশ কার্যকর করে দিল্লিতে নির্বাচন সদনে মুখ্য সচিবকে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের কাজের মন বলে যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সিভিল সার্ভিস এসোসিয়েশনের পদাধিকারীরা। এসোসিয়েশনের বক্তব্য, ‘এমনিতেই রাজনৈতিক চাপ ছাড়াও অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিকদের কর্তব্য পালন করতে হয়। অনেক বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও সরকারি আধিকারিকরা তাদের দায়বদ্ধতা পালন করেন। এমতাবস্থায় কমিশনের এ ধরনের পদক্ষেপ মানসিকভাবে রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের মনোবলে আঘাত করেছে। এমনকি আধিকারিকদের সার্ভিস রেকর্ডেও প্রভাব পড়বে।’
মুখ্যসচিবকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পবিত্রতা এবং অখন্ডতা রক্ষার জন্য তাঁরা বদ্ধপরিকর। জনসেবার সর্বোচ্চ মান ও সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তাঁরা বিশ্বাস করেন যে কোনও প্রশাসনিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে বিশেষ করে অফিসারদের ক্যারিয়ার রেকর্ড এবং মনোবলকে প্রভাবিত করে। তাই যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করার আগে ন্যায্যতা, যথাযথ পরিশ্রম এবং সমানুপাতিক কাঠামোকে মাথায় রেখে বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের WBCS দের সংগঠন।
তাঁদের দাবি, এই দুজন ইআরও তাদের কর্তব্য আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেছেন। আর যদি কোনও প্রক্রিয়াগত ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে তার পিছনে তাঁদের ইচ্ছাকৃত বা অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাই সরাসরি সাসপেন্ড ও এফআইআর দায়ের একটা কঠোর পদক্ষেপ বলে মনে করছেন তাঁরা। যা সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে WBCS সংগঠন। রাজ্যের মুখ্যসচিব সামগ্রিক বিষয়টির তাৎপর্য বুঝে সহানুভূতির সঙ্গে যাতে নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনার জন্য তদ্বির করেন সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস এক্সিকিউটিভ অফিসারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে।