রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! নেপথ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি আগামী ১৫ অগস্ট, ২০২৫-এ আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে। এই বৈঠকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে কিছু এলাকা বিনিময়ের প্রস্তাবও থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
এই শীর্ষ বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন। আলাস্কা স্থানটিকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছে ইউক্রেন। ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, দুই নেতা মূলত ইউক্রেন সংকটের দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে বৈঠক করবেন।
রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করেছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত দশ-হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। আলাস্কা বৈঠকের আগে পুতিন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন বলে খবর।
প্রেসিডেন্ট পদে এসেই ট্রাম্প রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যস্থতায় চেষ্টা করছেন। যদিও তাতে বড় কোনও সাফল্য আসেনি।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে পোস্টে লিখেছেন, ‘অত্যন্ত প্রত্যাশিত বৈঠকটি আগামী শুক্রবার আলাস্কায় হবে।’ তিনি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়ার জন্য উপকারী কিছু এলাকা বিনিময় হতে পারে’। তবে এই নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
এখনও পর্যন্ত রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তিন দফা আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। রুশ হামলায় পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের বহু এলাকা ধ্বংস হয়েছে এবং বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। বহুবার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও কিয়েভের যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন পুতিন। এখনও তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি নন। তবে পুতিন বলেছেন, আলোচনার ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ গেলে তবেই জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
গত মাসে ইস্তাম্বুলে বৈঠকে রুশ প্রতিনিধিরা কঠোর শর্ত দিয়েছেন, কিয়েভকে কিছু এলাকা ছেড়ে দিতে হবে এবং পশ্চিমা সামরিক সহায়তা ত্যাগ করতে হবে। ২০২১ সালের জুনে জেনেভায় বাইডেন-পুতিন বৈঠকের পর প্রথম মার্কিন-রুশ প্রেসিডেন্টদের সরাসরি সাক্ষাৎ হবে আলাস্কা শীর্ষ বৈঠক হবে। ট্রাম্প ও পুতিন শেষবার ২০১৯ সালে জাপানে জি-২০ সম্মেলনে বসেছিলেন। এরপর ফোনালাপ হলেও মুখোমুখি হননি।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, ট্রাম্পকে রাশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতে বৈঠক রাশিয়ায় করার আশা রয়েছে। এছাড়া পুতিন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের ফলাফল জানিয়েছেন। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন এবং রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্ক উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছেন শি জিনপিং।
পুতিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। দুই দেশই সম্প্রতি মার্কিন শুল্ক নীতির সমালোচনা করেছে, যা রাশিয়ার তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর আরোপ করা হয়েছে। শি এবং মোদি উভয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিজেদের শান্তি উদ্যোগ তুলে ধরলেও বড় সাফল্য মেলেনি।