বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়ায় বেআইনি কিছু হয়েছে এটা প্রমাণ হলে ওই কাজ বাতিল করে দেওয়া হবে, মঙ্গলবার এক মামলার শুনানিতে স্পষ্ট জানাল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারে ভোটার তালিকার সংশোধন নিয়ে যখন দেশজুড়ে আলোড়ন চলছে তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
চলতি বছরের শেষ দিকে বিহার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ওই রাজ্যে চলছে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনের কাজ। ইতিমধ্যেই প্রকাশ করা হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। যে তালিকায় বাদ গিয়েছে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম।
ভোটার তালিকায় নাম বহাল রাখতে কমিশন ১১ ধরনের নথি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। যারা সেই নথি দিতে পারেননি তাদের নাম বাদ গিয়েছে। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দায়ের হয়েছে একাধিক মামলা। ওই ১১ টি নথির মধ্যে অবশ্য আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড নেই। কারণ কমিশন জানিয়েছে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড কখনওই নাগরিকত্বের পরিচয় নয়। এই দুই সচিত্র পরিচয় পত্র শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি কোন এলাকার বাসিন্দা তার প্রমাণ। নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডকে মান্যতা দেয়নি সর্বোচ্চ আদালতও।
অন্যদিকে মামলাকারীদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন, নাগরিকত্ব নির্ধারণ করার অধিকার কি আদৌ নির্বাচন কমিশনের আছে? বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে কী ধরনের মারাত্মক ভুল হয়েছে মামলাকারীদের আইনজীবীরা সেই বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরেন। যে সমস্ত ভোটারের নাম মৃত বলে দেখানো হয়েছে, তাঁদেরকেই আদালতে হাজির করা হয়। এরপরই বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে কড়া মন্তব্য করে সর্বোচ্চ আদালত।
বিচারপতি সূর্য কান্ত স্পষ্ট জানান, বিহারে যদি এই ধরনের ভুল আরও সামনে আসতে থাকে তবে তারা এই নিবিড় সংশোধনের কাজ বাতিল করতে বাধ্য হবেন।
১ অগস্ট প্রকাশিত হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। সেই তালিকা নিয়ে যে সমস্ত আপত্তি রয়েছে বর্তমানে সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশোধনের পর ১ সেপ্টেম্বর নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই সংশোধিত ভোটার তালিকাতেও কোনও রকম ভুলভ্রান্তি থাকলে তা বাতিল করে দেওয়া হবে বলে বিচারপতি জানান ।
কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ও বিজেপি হাতে হাত মিলিয়ে বহু ভোটারের নাম বাদ দিতে চাইছে। কমিশন এভাবেই বিহারে বিজেপিকে ফের ক্ষমতায় ফেরাতে চায়।