ভরা কোটাল এবং সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ের তাণ্ডবে গঙ্গাসাগরে কপিলমুনি আশ্রমের সামনে সাগরপাড় ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে। সমুদ্রপাড়ের কংক্রিটের রাস্তা থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক পোস্ট সবকিছুই তলিয়ে গিয়েছে সমুদ্র গর্ভে। ক্রমেই কমছে সাগর থেকে কপিলমুনি আশ্রমের দূরত্ব। আশ্রমের সামনে সাগর পাড়ের ভাঙন ঠেকাতে সেচ দফতরের তরফে শুরু করা হয়েছে আপৎকালীন মেরামতের কাজ। ঠিকাদার সংস্থার পক্ষ থেকে বহু সংখ্যক শ্রমিক লাগিয়ে লাগাতার মেরামতের কাজ চালানো হচ্ছে। সমুদ্রের স্রোত ঘোরাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে সসেজ। কোনও ক্ষেত্রে আবার শালবল্লা পুঁতে অস্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। তবে এই কাজ যথেষ্ট নিম্নমানের হচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কপিলমুনি আশ্রম সহ সাগরদ্বীপকে রক্ষা করতে স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। তবে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ শাসকদলের। ফি বছরই দুর্যোগ আসে, প্রতিনিয়ত ভেঙেই চলেছে কপিলমুনি আশ্রমের সম্মুখস্থ সাগর পাড়। প্রতিবারেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতের কাজ করে চলেছে সেচ দফতর। কয়েক মাসের মধ্যেই আবারও সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয় মেরামত করা সেই বাঁধ। তবে গঙ্গাসাগরে স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের জন্য বহুবার কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য চেয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের দাবি, গঙ্গাসাগর তথা সমগ্র সুন্দরবনে স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও রকম সহযোগিতা মেলেনি। তাই রাজ্যের একক উদ্যোগে এভাবেই আপৎকালীন মেরামত, কোথাও আবার রিং বাঁধ নির্মাণ করেই ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে থাই সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তবে নানান জটিলতায় সেই পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত করা এখনও সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভাঙন বিধ্বস্ত গঙ্গাসাগরে অন্যতম তীর্থক্ষেত্র কপিলমুনি আশ্রমের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কাছে।