রাজ্যে ১৩,৮১৬ বুথ বাড়িয়ে মোট ৯৪,৪৯৭ করার প্রস্তাব, বুধবার সর্বদল বৈঠক ডাকার সম্ভাবনা
নির্বাচন কমিশনের বুথ প্রতি সর্বোচ্চ ভোটার সংখ্যার নিয়ম বদলের জেরে রাজ্যে ১৩ হাজার ৮১৬টি ভোট বুথ বাড়তে চলছে। রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী এই তথ্য সামনে এসেছে। রাজ্যে বর্তমানে ভোট বুথের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬৮১। জেলাশাসকদের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী বর্তমান বুথ সংখ্যার সঙ্গে বর্ধিত বুথ যোগ হলে রাজ্যে মোট ভোট বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯৪ হাজার ৪৯৭। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যের এই বুধ বিন্যাসের নয়া তালিকা ইতিমধ্যেই স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে সর্বদল বৈঠক ডাকা হবে। রাজনৈতিক দলগুলির পরামর্শ অনুযায়ী জেলাশাসকদের রিপোর্ট ও রাজনৈতিক দলগুলির রিপোর্টের সমন্বয়ে চূড়ান্ত তালিকা নির্ধারিত হবে এবং সেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনে। তারপর রাজ্যের ভোট বুথের সংখ্যা নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি আকারে নির্বাচন কমিশন রাজ্যের নয়া বুথ বিন্যাস ঘোষণা করবে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বুধবার রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে সর্বদল বৈঠক বসতে চলেছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
এতদিন একটি বুথে সর্বাধিক ১৫০০ ভোটার ভোটদান করতে পারতেন। কালীগঞ্জ বিধানসভার উপ নির্বাচন থেকেই নয়া নিয়ম চালু করে নির্বাচন কমিশন। একটি বুথে সর্বাধিক ১২০০ ভোটার ভোট দান করতে পারবেন। কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের পর একই নিয়মে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ভোট বুথে বিন্যাস করা হয়েছে। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ সহ যে রাজ্যগুলিতে বিধানসভার নির্বাচন রয়েছে সেখানেও একই নিয়মে ভোট বুথের বিন্যাস হবে। বলা ভালো, দেশজুড়ে সমস্ত নির্বাচনেই এই অভিন্ন নীতি বজায় থাকবে।
জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের পাঠানো রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে রাজ্যে ১৩ হাজার ৮৫৩টি বুথ নতুন করে তৈরির প্রয়োজনীয়তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রাজ্য জুড়ে ৩৭ টি বুথ সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি ১,২৫৩টি বুথের পরিকাঠামো নতুনভাবে তৈরি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ৭০৩টি বুথ স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জেলাস্তরের রিপোর্টে। রাজ্যে বর্তমানে ৮০,৬৮১টি বুথ রয়েছে। জেলাশাসকদের প্রস্তাবিত বুথ সংযুক্তিকরণের ফলে রাজ্যে বর্তমানে মোট বুথ সংখ্যা হবে ৯৪ হাজার ৪৯৭। আপাতত, জেলাওয়ারি এই প্রস্তাব রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। সর্বদল বৈঠক থেকে রাজনৈতিক দলগুলির প্রস্তাব মিললে দুপক্ষের প্রস্তাবকে সংযুক্ত করে রিপোর্ট পাঠানো হবে নির্বাচন কমিশনে। কমিশন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
রাজ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বুথ রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, ৮,৮৫৯। প্রস্তাবিত বুথ সংখ্যা হল ১০,৪১০। দ্বিতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা, বর্তমানে বুথ সংখ্যা ৮,৬৫৮, প্রস্তাবিত বুথ সংখ্যা হল ১০,০৫৪। তৃতীয় স্থানে মুর্শিদাবাদ, বর্তমানে বুথ সংখ্যা ৫,৮৯৫, প্রস্তাবিত বুথ সংখ্যা হল ৭,১৪৬। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে হুগলি ও নদিয়া।