কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলার চশোটি গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোরের ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫। এর মধ্যে দুইজন সিআইএসএফ জওয়ানও রয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬৭ জন এবং এখনও পর্যন্ত ২২০ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ বলে জানা গেছে। দ্রুততার সাথে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার রাত থেকে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে সেনাবাহিনীর ৩০০ জওয়ান।
অতিরিক্ত এসপি প্রদীপ সিং শুক্রবার সকালে জানান, “৪৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। আহত ১০০ জনেরও বেশি মানুষকে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার সকালে কাশ্মীরের অন্যতম তীর্থযাত্রা মচাইল মাতা মন্দিরের যাত্রাপথে এই ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে। পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত এই মন্দিরের যাত্রাপথের পাদদেশে অবস্থিত চশোটি গ্রাম মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে আচমকা বন্যায় পুরো ভেসে যায়। হঠাৎই ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে যাত্রাপথে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সেইসময় ওই এলাকায় প্রায় ১২০০ জন মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানান, পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অবহিত করেছেন। তিনি বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে তথ্য আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে, তবে রাজ্য ও কেন্দ্র, উভয়পক্ষ থেকেই একযোগে হাত লাগানো হয়েছে উদ্ধার কাজে।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “কিশতওয়ারে ক্লাউডবার্স্ট ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা রইল। উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চলছে, এবং সরকার সবরকম সহায়তা দেবে।”
জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল মনোজ সিনহা শোকপ্রকাশ করে বলেন, “এই ভয়াবহ ঘটনার খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” তিনি পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, এনডিআরএফ ও এসডিআরএফকে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ আরও জোরদার করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
একেই দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল, তার ওপর একটানা বৃষ্টিতে আবহাওয়াও প্রতিকূল। তারই মধ্যে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। কিন্তু উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে দুই সিআইএসএফ জওয়ানের মৃত্যুতে নতুন করে শোকের ছায়া উপত্যকায়।