গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে প্রবল বৃষ্টিপাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৪ ।
প্রবল বৃষ্টিপাত, মেঘভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, বজ্রপাত ও ঘরবাড়ি ধসে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুনের জেলা, যেখানে বন্যা ও ভারী বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০০ জনের, বলে জানিয়েছেন প্রাদেশিক প্রধান সচিব শাহাব আলী শাহ।
উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত একটি হেলিকপ্টার বাজাউর জেলায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার পথে খারাপ আবহাওয়ার কারণে ভেঙে পড়ে। এতে পাইলটসহ পাঁচ ক্রু সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
সোয়াট জেলায় নদী ও খাল উপচে পড়ার ফলে ২,০০০-এর বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী বাহিনী।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় জরুরি বৈঠক করেন। তাঁর দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৌসুমি বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় রাস্তা ও বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে – ১৮০ জন। গিলগিট-বালটিস্তানে মারা গেছেন ৫ জন এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৯ জন।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে প্রতিবছরই ক্রমবর্ধমানভাবে ঘন ঘন ও ভয়াবহ বর্ষার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানবসৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যা বেড়েছে। এতে পাকিস্তানের হিমবাহ গুলো দ্রুত গলে যাচ্ছে, বিশেষ করে গিলগিট-বালতিস্তানের হিমবাহ, যেগুলো দেশটির ৭৫ শতাংশ জল সরবরাহ করে থাকে।
বিশ্ব আবহাওয়া বিশ্লেষণকারী সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন’ জানিয়েছে, গত ২৪ জুন থেকে ২৩ জুলাই – এক মাসের মধ্যে পাকিস্তানে গড় বৃষ্টিপাত ১০-১৫ শতাংশ বেশি হয়েছে, যা মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমনজনিত ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন’ বৃদ্ধির ফল।