২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছিল রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। সেই সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন। শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ২০২২ সালে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে থাকতেন তবে তাঁরা কখনওই ইউক্রেন আক্রমণ করতেন না। পূর্ব ইউরোপেও কোনও যুদ্ধ হত না। কিন্তু তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনও কথাই শোনেননি। বাধ্য হয়েই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। তবে এক্ষেত্রে পুতিন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম করেননি।
শুক্রবার আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। বৈঠক শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পুতিন এই দাবি করেন। একই সঙ্গে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে চলতি সম্পর্ককে আরও মজবুত করার প্রয়োজন আছে বলেও পুতিন জানান।
পুতিন যখন এই মন্তব্য করছিলেন সেই সময় তাঁর পাশে হাসিমুখে দাঁড়িয়েছিলেন ট্রাম্প।
এর আগে ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, ২০২২ সালে যদি তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকতেন তাহলে তিনি কখনওই এই যুদ্ধ শুরু হতে দিতেন না। শুক্রবার রাতে কার্যত ট্রাম্পের বক্তব্যকেই মেনে নিয়েছেন পুতিন।
২০২২ সালে আমেরিকার তৎকালীন শাসকদলের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছিল সে কথাও জানিয়েছেন পুতিন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২২-এর শুরুতেই মস্কোর তরফে আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের কর্তাদের বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল যে এখনই যুদ্ধ শুরু করা কোনও অবস্থাতেই ঠিক নয়। যুদ্ধে জড়ানোর সিদ্ধান্ত বড় মাপের ভুল। কিন্তু তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন তাঁর কোনও কথাই শোনেনি।
তবে এই বিষয়ে সরাসরি বাইডেনের নাম করেননি পুতিন। অন্যদিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও ভালো বলে জানিয়েছেন পুতিন। এই প্রসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের মধ্যে ব্যবসায়িক ও বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্ককে আমাদের আরও মজবুত করতে হবে, এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অতীতে রাশিয়া ও আমেরিকার সম্পর্ক যে খুব একটা ভালো ছিল না সে কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন পুতিন।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিন বলেন, ট্রাম্প অত্যন্ত ইতিবাচক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ায় তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে সুবিধা হয়েছে। ট্রাম্প বাস্তব পরিস্থিতি বুঝেছেন এবং সেই মতোই পরামর্শ দিয়েছেন। ট্রাম্পের পরামর্শ মতো এগিয়ে চললে ইউক্রেন সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে বলে পুতিনের আশা।
অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে তিনি সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। এবার রাশিয়াকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলতে হবে। দুই দেশ চাইলে পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে তিনিও থাকতে পারেন বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন।