১৩৪ তম ডুরান্ড কাপ ফুটবলের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি কলকাতা ময়দানের ২ প্রধান। রবিবার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম্যাচ শুরু সন্ধে ৭ টা থেকে। নকআউট পর্বের ম্যাচটি নির্ধারিত ৯০ মিনিটে মীমাংসা না হলে, হবে ট্রাইব্রেকার। শেষ প্রস্তুতিতে সেটাও অনুশীলন করেছে মোলিনা-ব্রুজোর ফূটবলালরা।
ডার্বি ম্যাচ ঘিরে তেতে রয়েছেন ২ প্রধানের সদস্য ও অগুনতি সমর্থক। ভাগ্যবানদের নাগালে যুবভারতীর টিকিট। বঞ্চিতদের ভরসা ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচার। এসবের মাঝে কথার লড়াইও কম নয়। সোস্যাল মিডিয়ায় আছড়ে পড়ছে সেসব। ভরা গ্যালারির নজর কাড়তে স্লোগান। যেখানে স্থান পায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রতিবাদ আবার কিছু ঘটনার সমর্থনও। এককথায় ফুটবলারদের মতো সদস্য-সমর্থকরাও নজর কেড়ে নিতে তৈরি।
কলকাতার দুই প্রধানের ডার্বি ম্যাচের ফল নিয়ে আগাম মন্তব্য করার ঝুঁকি নিতে রাজি নন প্রাক্তন ফুটবলাররা। তবে ম্যাচের রঙ পাল্টে দেওয়া ফুটবলারদের কথা বলেছেন অনেকেই। রবিবার দুদলের এমন ৫ ফুটবলারের দিকে বরং থাকুক বাড়তি নজর।
লিস্টন কোলাসো (মোহন বাগান)
চলতি ডুরান্ড কাপ ফুটবলে দুরন্ত ছন্দে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসো। গ্রুপ পর্বের ৩ ম্যাচে করেছেন ৫ টি গোল। তাঁর পাস থেকে গোল এসেছে ১ টি। গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এখন ১ নম্বরে বাগানের এই উইংগার। বিপক্ষের রক্ষণকে হেলায় টলিয়ে নিখুঁত ফিনিশিং গোয়ার এই ফুটবলারের বড় অস্ত্র। বিপক্ষের সীমানায় তাঁর বিপজ্জনক দৌড় চিন্তায় রাখে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের ডিফেন্ডারদের। ম্যাচের রঙ যে কোনও মুহূর্তে পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে জাতীয় ফুটবল দলের অপরিহার্য ফুটবলারের।
হামিদ আহদাদ (ইস্টবেঙ্গল)
মরক্কোর স্ট্রাইকার হামিদ আহাদাদ। এই বছরই সই করেছেন ইস্টবেঙ্গল এফসিতে। ডুরান্ডে অভিষেক ম্যাচে নামধারী এফসির বিরুদ্ধে গোল করে লাল-হলুদের সদস্য সমর্থকদের মন জিতেছেন। ডুরান্ডের গ্রুপ পর্বে গোল করেছেন ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের বিরুদ্ধেও। রবিবার মর্যাদার ম্যাচে ‘কি’ ফ্যাক্টর হতে পারেন তিনি। দলের আক্রমণভাগে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা- নিচে নেমে বল নিয়ে আক্রমণ শানানো আর নিখুঁত শট লাল-হলুদের প্রথম একাদশে স্থান পাকা করেছে। ডার্বির নতুন নায়ক হওয়ার সবগুণ রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের এই বিদেশির।
জেমি ম্যাকলারেন ( মোহনবাগান)
অস্ট্রেলিয় মার্কসম্যান জেমি ম্যাকলারেন। গত মরসুম থেকেই রয়েছেন মোহনবাগানে। গতবার আইএসএল ফুটবলে এবং এবার লিগে কলকাতা ডার্বিতে গোল করে সদস্য-সমর্থকদের প্রত্যাশা বাড়িয়েছেন। ডুরান্ডের গ্রুপ পর্বে গোল করেছেন ডায়ন্ড হারবার এফসির। বাগানের আক্রমণভাগের এই ফুটবলার বিপক্ষের বক্সে কোণ থেকেও বল জালে জড়িয়ে দিতে পারেন। ডার্বি ম্যাচে লাল-হলুদের সেন্টার ব্যাক কেভিন সিবিল কিংবা আনোয়ার আলিকে তাই সারক্ষণই ব্যস্ত থাকতে হবে ম্যাকলারেনকে সামলাতে।
মিগুয়েল ফিগুয়েরা ( ইস্টবেঙ্গল)
ইস্টবেঙ্গলের আরও এক নতুন বিদেশি। ১ বছরের চুক্তিতে লাল হলুদ শিবিরে এবার যোগ দিয়েছেন ব্রাজিলের এই ফুটবলার। বিপক্ষের গোলবক্সে তাঁর ঠিকানা লেখা পাসে গোল না করা রীতিমতো লজ্জার। পর্তুগিজ ফুটবলার বসুন্ধরা কিংসে খেলার সময় এই কাজটি বড় বেশি করে করতেন। তাছাড়া কোচ অস্কার ব্রুঁজোর কোচিং এ খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে ফিগুয়েরার। ডুরান্ডের গ্রুপ পর্বে তাঁর পাস থেকে এসেছে ২ টি গোল। ডার্বি মঞ্চে নায়ক হয়ে ওঠার লড়াইতে থাকতে পারে তাঁর নামও।
সাহাল আব্দুল সামাদ (মোহনবাগান)
এবছর মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হয়ে অসাধারণ ফর্মে আছেন মিডফিল্ডার সাহাল আব্দুল সামাদ। জাতীয় দলের ফুটবাল ১৩৪ তম ডুরান্ড কাপে, গ্রুপ পর্বে ২ গোল এবং ৪ টি অ্যাসিস্ট করেছেন। তাঁর খেলা তৈরির ক্ষমতা, ফাইনাল পাস নজর কেড়েছে ফুটবল বোদ্ধাদের। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সাহালকে ঘিরে আস্থা অটুট কোচ হোসে মোলিনারও। কুইক মুভ ও ফিনিশিং তো আছেই, রয়েছে বিপক্ষের রক্ষণকে ছিন্নভিন্ন করার ক্ষমতাও। রবিবার সাহাল ছন্দে থাকলে শেষ চারে ওঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে মেরিনার্সদের।