নতুন খরিফ মরশুমে ধান সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য সরকার। ২০২৫-২৬ সালের ধান সংগ্রহ প্রকল্পে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার জন্য ১ নভেম্বর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হবে ক্যাম্প। সম্প্রতি খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর এবং সমবায় দপ্তরের যৌথ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছরও সমবায়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে কুইন্টাল প্রতি ২,৩৬৯ টাকা দরে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হবে।ক্যাম্পগুলিতে বায়োমেট্রিক যাচাই ছাড়া কোনও ধান কেনা হবে না এবং কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলবে। পাশাপাশি সমস্ত ক্যাম্পে প্রচারের জন্য মাইকিং, লিফলেট ও ব্যানার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
চলতি বছর ১৭৯টি মোবাইল সিপিসি চালু করা হয়েছে যাতে প্রান্তিক এলাকার কৃষকরাও কাছাকাছি জায়গায় ধান জমা দিতে পারেন। গত মরশুমে রাজ্য সরকারের সমবায় দপ্তর ৯১৩টি পিএসএস-এর মাধ্যমে ৯ লক্ষ ৭ হাজার ৯৯৮ মেট্রিক টন, ১১টি ল্যাম্পস-এর মাধ্যমে ৬৮২৬ মেট্রিক টন ও ১২টি পিএমএসএস-এর মাধ্যমে ১০,৫৫৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করেছিল। এবার সেই সাফল্যের রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়াই সরকারের লক্ষ্য। প্রশিক্ষণ ও পরিকাঠামোগত প্রস্তুতি নিয়ে বেনফেড, কনফেড এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি কাজ শুরু করে দিয়েছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রাথমিক কাজ শেষ করে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ক্যাম্প সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ শুধুমাত্র ধান কেনার পরিকল্পনা নয়, বরং কৃষকের ন্যায্য দাম, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং দ্রুত লেনদেন নিশ্চিত করার একটি প্রতিশ্রুতি বলে জানিয়েছে সরকারপক্ষ।
প্রকল্পকে সফল করতে সরকার কৃষকদের পাশে থাকারও বার্তা দিয়েছে।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্যের প্রায় সমস্ত রেশন দোকানে চাল এখন রাজ্যেই উৎপাদিত ধান থেকে আসছে। বাইরে থেকে চাল আমদানি করার প্রয়োজন পড়ছে না। সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, আগে কৃষকদের ধান ৪২০-৪২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হত, এখন তাঁরা অনেক বেশি দাম পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে ২০১২ সাল থেকে চাল আমদানি বন্ধ হয়েছে এবং এখন কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ধান সরকারের কাছে সরাসরি বিক্রি করতে পারছেন। গড় উৎপাদন ১৫ কুইন্টাল হওয়ায় চাষিরা কাছের ক্যাম্পেই ধান জমা দিতে পারবেন। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ সমবায়ে নতুন বোর্ড এসেছে, ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আরও বেড়েছে বলেই দাবি মন্ত্রীর।