প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে এক বিশাল সাফল্য অর্জিত হল। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা বাড়ানোর লক্ষ্যে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতের তরফে ৯৭টি এলসিএ তেজস(মার্ক ১এ) যুদ্ধবিমান কেনার প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ করা হল ৬২,০০০ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাবিনেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর ফলে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL)-এর জন্য নতুন উত্পাদনের পথ প্রশস্ত হল।
এর আগে সরকার ৮৩টি তেজস মার্ক ১এ যুদ্ধবিমানের জন্য প্রায় ৪৮,০০০ কোটি টাকার অর্ডার দিয়েছিল। এবার ৯৭টি নতুন বিমানের অনুমোদন, যা এই যুদ্ধবিমানের মোট সংখ্যা ১৮০-তে নিয়ে গেল। এর ফলে হ্যাল-এর উৎপাদন সক্ষমতা আরও বাড়বে।
এই উদ্যোগের ফলে ভারতীয় বায়ুসেনা তাদের অতি পুরনো মিগ-২১ যুদ্ধবিমানের বহরকে অবসর দিতে পারবে, যা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
এই প্রকল্প শুধুমাত্র হ্যাল-কে নয়, বরং দেশজুড়ে থাকা ছোট ও মাঝারি প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থাগুলোকেও বড় ব্যবসায়িক সুযোগ এনে দেবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং এয়ার হেডকোয়ার্টার্সের সম্পূর্ণ সহায়তায় এই প্রকল্প দেশীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদনে নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি হ্যাল-এর পুনরুজ্জীবনের জন্য শুরু থেকেই উদ্যোগী। তাঁর সরকারের অধীনে সংস্থাটি দেশীয় যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং তার ইঞ্জিন তৈরির একাধিক প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে।
মোদি দেশীয় প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের একটি ফ্লাইটের উড়ানে নিজে অংশগ্রহণ করেন, যা ছিল কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম কমব্যাট বিমান চড়ার অভিজ্ঞতা।
এলসিএ তেজস(মার্ক ১এ) আগের সংস্করণের তুলনায় উন্নত রাডার ও অ্যাভিয়ানিক্স প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে। নতুন মডেলে ৬৫ শতাংশের বেশি দেশীয় উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে, যা আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে এক বড় পদক্ষেপ।
এই প্রকল্প শুধু একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি নয়, বরং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ও ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র প্রতীক হিসেবে ভারতের অ্যারোস্পেস ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও সক্ষমতার পরিচয় বহন করছে। এটি ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে এক ঐতিহাসিক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
