ভোটাধিকার হয় ১৮ বছর বয়সে। অথচ সাম্প্রতিক অতীতে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম তোলার হিড়িক পড়েছে ৫০ থেকে ৭০-৭৫ বছর বয়সিদের। সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে জানা গেছে মাসে প্রতি বুথে অন্ততপক্ষে একটি অথবা দুটি এ ধরনের আবেদন অর্থাৎ ফর্ম সিক্স জমা পড়ছে। অর্থাৎ বর্তমানে রাজ্যে বুথ ৮০ হাজার ৬৮১ হলে বুথপ্রতি যদি একটি করেও এ ধরনের আবেদন জমা পড়ে সংখ্যাটা দিয়ে দাঁড়ায় অন্ততপক্ষে ৮০ হাজার বা তার বেশি। আর রাজ্যের ভোটার তালিকার এই নতুন ” ট্রেন্ড ” চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের কপালে। এমনিতেই সীমান্তবর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। তার উপরে এসআইআর নিয়ে রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের প্রবল বিরোধিতা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে ভোটার হওয়ার এই নতুন ” ট্রেন্ড ” অবশ্যই নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলছে রাজ্য সিইও দফতরকে।
বিহারের পর গোটা দেশজুড়ে যখন এসআইআর শুরু হতে যাচ্ছে ঠিক তার আগেই পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম তোলার যে হিড়িক পড়েছে তাও আবার প্রবীণ নাগরিকদের, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে কমিশনের।
যখন ১৮ বছর বয়সে ভোটাধিকার পাওয়া যায়, প্রশ্ন উঠছে তাহলে এই বয়স্ক বা প্রবীণরা এতদিন কেন ভোটার কার্ড বানাননি? এই সমস্ত আবেদনকারীর ক্ষেত্রে একটি বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। জেলাশাসকদের মাধ্যমে এই নজরদারির কাজ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থাকবে জেলাশাসক বা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের হাতেই। কমিশন খতিয়ে দেখতে চাইছে যে প্রবীণ ব্যক্তি ভোটার হতে ফর্ম ৬ জমা করেছেন তাঁর সমস্ত লিঙ্ক, তাঁর কোনও আত্মীয়-স্বজনের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে কিনা। সবকিছু খতিয়ে দেখে তবেই তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় তুলতে চাইছে কমিশন। যাদের বয়স ৫০ থেকে শুরু করে প্রায় ৮০, খুব স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে এতদিন তাঁরা ছিলেন কোথায়? কমিশন ইতিমধ্যেই জেলাশাসক, ইআরও এবং বুথ লেভেল অফিসারদের কাছে যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে সেক্ষেত্রে তার পরিবারের কোনও সদস্য বা সদস্যার নাম সংশ্লিষ্ট ভোটার তালিকায় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি থাকে তাহলে তাঁর পরিচয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে কিনা এই সব দিক বিবেচনা করে তবেই নির্বাচন কমিশন এই সমস্ত বয়স্ক নতুন ভোটারের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবে বলে জানা গিয়েছে নির্বাচন কমিশন সূত্রে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে এসআইআর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি, তার আগেই রাজ্যে যেভাবে ভোটার তালিকায় নাম তোলার হিড়িক পড়েছে সার্বিকভাবে সবদিক খতিয়ে দেখে তবেই ভোটার তালিকায় নাম তুলতে চায় কমিশন।