পথ কুকুরদের স্থানান্তর নিয়ে নানা বিতর্কে এবার সুর চড়ালেন প্রখ্যাত পরিচালক রামগোপাল ভার্মা। কুকুরপ্রেমীদের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, যদি তারা পথ কুকুরদের নিয়ে সত্যিই এত চিন্তিত হন, তবে তাদের উচিত নিজেদের গেস্টরুমগুলো কুকুরদের জন্য খুলে দেওয়া।
নিজের ‘এক্স হ্যান্ডলে এক দীর্ঘ পোস্টে রাম গোপাল ভার্মা কুকুরপ্রেমীদের ‘স্থানান্তর’-এর দাবিকে ‘জাদুকাঠি’ বলে উপহাস করেছেন। তিনি বলেন, “সবাই ‘কুকুর সরাও, কুকুর সরাও’ বলে জপ করছে, যেন এটা কোনো জাদুমন্ত্র। কিন্তু স্থানান্তর মানে তো এক রাস্তা থেকে সমস্যাটাকে আরেক রাস্তায় ঠেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।”
তিনি আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, “একটা এলাকা পরিষ্কার করলে কয়েকদিনের মধ্যেই সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে নতুন কুকুর চলে আসে, কখনও কখনও আগের থেকেও খারাপ পরিস্থিতি হয়। আর আপনারা লাখ লাখ পথ কুকুরকে ঠিক কোথায় পাঠাতে চাইছেন? শেষ গণনায় প্রায় ৭ কোটি পথ কুকুর রয়েছে এবং সংখ্যাটা বাড়ছে।”
রাম গোপাল ভার্মার মতে, “স্থানান্তর কোনো সমাধান নয়, এটা একটা বিভ্রম। এটা অজ্ঞদের অজুহাত, কঠিন সিদ্ধান্ত এড়ানোর জন্য।”
পরিচালক আরও যোগ করেন, “কুকুরপ্রেমীরা তাদের এসি ঘরে বসে, তাদের আমদানি করা প্রজাতির কুকুরগুলোকে সাটিনের কুশনের ওপর বসিয়ে জ্ঞান দেন,ভন্ডামি করেন। অন্যদিকে গরিব মানুষরা রাস্তায় আসল বিপদ মোকাবিলা করে। যদি তারা এতই যত্নশীল হন, তবে তারা তাদের গেস্টরুমগুলো এই পথ কুকুরদের জন্য খুলে দিক।”
এই পোস্টের আগে তাঁর একটি টুইটে রাম গোপাল ভার্মা লিখেছিলেন, “স্কুলে আমাদের যে দারুণ কবিতাটি শেখানো হয়েছিল – ‘অল থিংস ব্রাইট অ্যান্ড বিউটিফুল, অল ক্রিয়েচার্স গ্রেট অ্যান্ড স্মল, অল থিংস ওয়াইজ অ্যান্ড ওয়ান্ডারফুল, দ্য লর্ড গড মেড দেম অল’, সেখানে তেলাপোকা, যা দূষণ ছড়ায়; ইঁদুর, যা প্লেগ ছড়ায়; সাপ, যা বিষ ঢালে; মশা, যা রোগ সৃষ্টি করে এবং পথ কুকুর, যা বাচ্চাদের মেরে ফেলে – এদের কথা বলা হয়নি।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি থেকে পথকুকুর সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে হবে এবং রাজধানীকে পথকুকুর-মুক্ত করতে হবে। কোনও সংগঠন বাধা দিলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে বিতর্ক ও পশুপ্রেমীদের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা ও এন অঞ্জরিয়ার বেঞ্চে মামলার শুনানি হলেও রায় আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
