দিব্যেন্দু ঘোষ
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অগ্রণী উদ্যোগ ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ (APAS) ১৫ দিনের মধ্যেই অভূতপূর্ব সাড়া ফেলল। মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত সফল প্রকল্প। রাজ্যের সর্বত্র ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই কর্মসূচিতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। গোটা বাংলা জুড়ে ৯,০০০টি ক্যাম্প। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল স্তরের দূরদর্শী নেতৃত্বের শক্তিকে তুলে ধরেছে।
অসাধারণ সাড়া। সমস্ত প্রত্যাশা ছাপিয়ে গেছে। প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের এই প্রকল্পে প্রতিদিন গড়ে ৩.৩৩ লক্ষ মানুষ অংশ নিয়েছেন। মমতা সরকারের শাসনব্যবস্থার প্রতি বাংলার মানুষ আস্থা রাখছে। এই প্রকল্পে রাজ্যের ৮০,০০০-এর বেশি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি বুথের জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বাংলায় গণতান্ত্রিক জাগরণের ছবি তুলে ধরার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। পরের বছর বিধানসভা ভোট। চোদ্দ বছর শাসন-সিংহাসনে থেকে মমতা সরকারের প্রতি প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া থাকবে। পাশাপাশি একাধিক দুর্নীতিতে ফালাফালা প্রশাসন। শিক্ষা, রেশন, কয়লা, গরু কেলেঙ্কারির মতো সরকার-বিরোধী অভিযোগ তুলে বারবার সরব বিরোধীরা। চাপ বাড়িয়েছে আরজি কর কাণ্ড, কসবা ল কলেজে ধর্ষণের মতো ঘটনা। বিচার চলছে। জেলে থাকা একাধিক নেতা-মন্ত্রী ছাড়াও পেয়েছেন। দুর্নীতির দায় ঘাড় থেকে নামানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে মমতা প্রশাসন। পাশাপাশি সুষ্ঠু প্রশাসন হয়ে ওঠারও চেষ্টা। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে সেবাশ্রয়-এর মতো স্বাস্থ্যক্যাম্প অভিষেকের। দুয়ারে সরকার, দিদিকে বলো-র মতো জনসংযোগ। মিটিং, মিছিলে বারবার মানুষের পাশে থাকার বার্তা মমতা-অভিষেকের। সংগঠনে কড়া বার্তা অভিষেকের। বাংলা অস্মিতার প্রশ্নে, ভাষা সন্ত্রাসের আবহে বিরোধী শিবিরে পাল্টা লড়াই ছুড়ে দেওয়ার কৌশল। ছাব্বিশের আগে একটু একটু করে অভিযোগমুক্ত হয়ে, সতেজভাবে ভোটে যাওয়ার কাজ চালাচ্ছে তৃণমূল। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, স্বাস্থ্যসাথী তো আছেই, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মমতা শুরু করলেন শ্রমশ্রী। সঙ্গে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান তো আছেই। অভিনব সাড়া।
৯,০০০ শিবিরে নাগরিক ও প্রশাসনের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ সরকার ও জনগণের সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। তৃণমূলের প্রচার, মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ লক্ষ মানুষকে একত্রিত করার ক্ষমতা বাংলার গভীর গণতান্ত্রিক চেতনা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অঙ্গীকারের প্রতি মানুষের আস্থা প্রকাশ করেছে। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’-এর এই ১৫ দিনের যাত্রা অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের এক উজ্জ্বল সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ছাব্বিশে তৃণমূলকে কতটা ডিভিডেন্ড দেয়, সেটা সময়ই বলবে।