দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিজেপি এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছে, বুধবার যেখানে হামলাকারী তথাকথিত অভিযোগকারী সেজে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে জনশুনানি চলাকালীন তাঁর কাছে গিয়ে আচমকা আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রেখা গুপ্তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসকদের একটি দল তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী আপাতত সুস্থ এবং বিপদমুক্ত বলেই জানা গেছে।
দিল্লির মন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মাঠে নেমে যে কাজ করছেন, তা বিরোধীরা সহ্য করতে পারছে না। হামলার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে তা স্পষ্ট।” তিনি জানান, হামলাকারীর পেছনে কে বা কারা রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে।
সূত্র অনুযায়ী, হামলাকারীর নাম রাজেশ সাকরিয়া, বয়স ৪১, গুজরাটের রাজকোটের বাসিন্দা। তিনি একজন আত্মীয়ের জামিনের জন্য সাহায্য চাইতে এসেছিলেন, এমনটাই দাবি করেছেন। দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই গুজরাট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর পরিচয় যাচাই করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই যুবক কাগজপত্র হাতে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে এসে আচমকা হামলা চালান।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, “এই হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। গণতন্ত্রে মতভেদ ও প্রতিবাদ থাকতে পারে, কিন্তু হিংসার কোনও স্থান নেই। দিল্লি পুলিশ অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আমি আশাবাদী।”
দিল্লির বিরোধী দলনেত্রী আতিশি বলেন, গণতন্ত্রে প্রতিবাদের স্থান রয়েছে, কিন্তু হিংসার কোনও স্থান নেই। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম পদক্ষেপ নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী নিরাপদ আছেন বলেই আশাবাদী।”
দিল্লি কংগ্রেস সভাপতি দেবেন্দ্র যাদব বলেন, “এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীই যদি নিরাপদ না হন, তাহলে সাধারণ নারী বা পুরুষ কতটা নিরাপদ, তা ভাবার বিষয়।”
ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দিল্লি পুলিশ কমিশনার এসবিকে সিংহ নিজে তদন্তের তদারকি করবেন বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, যা প্রশাসনের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।