প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসামূলক মন্তব্যের জেরে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই ফের দলের অবস্থানের সঙ্গে ভিন্ন মত প্রকাশ করলেন শশী থারুর। এবার তিনি কার্যত সমর্থন করলেন লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পেশ করা বিতর্কিত সংবিধান সংশোধনী বিলকে, যেখানে বলা হয়েছে – গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত মন্ত্রী যদি টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন, তবে ৩১তম দিনে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে বা অপসারিত করা হবে।
সংবিধান (১৩০তম সংশোধনী) বিল, ২০২৫ কে বিরোধীরা “কঠোর” ও “অসাংবিধানিক” বলে আখ্যা দিয়েছে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র বলেন, “কাল যদি কাউকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ৩০ দিনের জন্য জেলে পাঠানো হয়, তাহলে কি তিনি আর মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন? এটা তো সরাসরি সংবিধান বিরোধী।”
কিন্তু শশী থারুর ভিন্ন মত পোষণ করে বলেন, “আপনি যদি ৩০ দিন জেলে থাকেন, তাহলে কি আপনি একজন মন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারবেন? এটা তো সাধারণ বোধের বিষয়। আমার কাছে এতে কোনও সমস্যা নেই।”
তিনি বলেন, “বিলটি যদি নির্বাচিত কমিটিতে পাঠানো হয়, তাহলে সেটা গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হওয়া উচিত।”
শশী থারুরের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব নতুন নয়। ২০২১ সালে দলের ভেতরেই গান্ধী পরিবারের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ঘিরে ইতিবাচক মন্তব্য, বিশেষত তাঁকে ‘পহেলগাম ও অপারেশন সিন্ধু’-র বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদের ব্রিফ করতে নির্বাচিত করা নিয়েও, দলের অস্বস্তি বেড়েছিল।
গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে থারুর বলেন, “দলে মতবিরোধ থাকতেই পারে। আমি কংগ্রেসের আদর্শের প্রতি গত ১৬ বছর ধরে বিশ্বস্ত থেকেছি।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না”, বরং এটাকে “মোদি সরকারের গতিশীলতা নিয়ে স্বীকৃতি” বলেই উল্লেখ করেন।
এই সপ্তাহের শুরুতেই থারুর বিতর্কে জড়ান যখন তিনি ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লার সম্মাননা উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনায় কংগ্রেসের অনুপস্থিতি নিয়ে পরোক্ষে কটাক্ষ করেন। কংগ্রেস এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও বিষয়টি নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের।
থারুরের সাম্প্রতিক মন্তব্য কংগ্রেসে তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। যদিও তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর অবস্থান ভারতের রাজনীতিতে বড় রদবদলের ইঙ্গিত দিতে পারে।
