অনেকেই বলেন আসলে তিনি এক ব্যর্থ সেনানায়ক। তবুও তাঁর মতো মার্কিন প্রেসিডেন্টের অতিঘনিষ্ঠ হতে পারা পাক সেনাপ্রধান সম্ভবত আর নেই পাকিস্তানের ইতিহাসে। বলা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তোষামোদ আর খুশি করার ক্ষেত্রে আসিম মুনিরের ধারেকাছে আর কেউ নেই। একদিকে তেল, ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিরল খনিজের প্রলোভন আর অন্যদিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের স্বপ্ন দেখিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কাছে টেনে নকল সাফল্যের মুকুট মাথায় পরেছেন।
সেনাপ্রধান হিসেবে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ রুখতে একেবারে ব্যর্থ হয়েছেন মুনির। তবুও চরম পরাজয়ের পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির নিজেকে ‘ফিল্ড মার্শাল’ পদে উন্নীত করেন। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, এর পরেই মার্কিন ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে তেলের ভাণ্ডার, ক্রিপ্টো প্রকল্প এবং বিরল খনিজের অবাস্তব প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। কিন্তু পাকিস্তানের বাস্তব তেল উৎপাদন দিন দিন কমছে। ২০১৯ সালে দৈনিক ৮৯ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করলেও ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস ৬৪ হাজার ব্যারেলে। ইমরান খানের সময় যেটিকে বড় তেল আবিষ্কার বলে প্রচার করা হয়েছিল, সেটিও পরে কাজ করে না বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বিরল খনিজ নিয়ে মুনিরের দাবি আরও অবাস্তব। রেকো দিক প্রকল্পকে ঘিরে তিনি বছরে ২ বিলিয়ন ডলার আয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ উৎপাদন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা ২০২৮ সালের আগে নেই। অন্যদিকে পাকিস্তানের যখন আইএমএফ–এর ঋণ ছাড়া আর গতি নেই তখন মুনির ট্রাম্পের কাছে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রকল্পের টোপ ছুড়েছেন।
তবে এসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় চালটি ছিল ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ইঙ্গিত। আসলে ট্রাম্পের এগিয়ে চলার দর্শনটিই হল প্রচার আর প্রদর্শনী। কাজেই তোষামোদ আর স্তুতির জেরেই ওয়াশিংটনের কাছে থেকে অনেক প্রশ্রয় পেয়েছেন পাক সেনাপ্রধান। আসলে বলা হচ্ছে আমেরিকার কাছাকাছি আসতে পাকিস্তানের এই মরিয়া চেষ্টা কেবল অর্থনৈতিক হতাশারই প্রতিফলন, যেখানে মুনির ট্রাম্পকে খুশি করার জন্য মরীচিকার মতো স্বপ্ন বিক্রি করছেন।