রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর বিপুল পরিমাণ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যে কারণে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। এই সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা যথেষ্টই কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয় বলে মনে করছেন আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।
তিনি বলেছেন ভারতকে কখনওই চিনের সঙ্গে এক করে দেখা ঠিক না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উচিত হয়নি ভারতের উপর এই ধরনের শুল্ক আরোপ করা। ট্রাম্প যেভাবে ভারত পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির কৃতিত্ব দাবি করছেন সেটাও বিশ্বের দুই শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশের সম্পর্ক এই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আমেরিকার পরামর্শ উপেক্ষা করে ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বজায় রেখেছে। যে কারণে ট্রাম্প প্রথম দফায় ২৫ শতাংশ পরে জরিমানা হিসেবে আরও ২৫ শতাংশ অর্থাৎ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারতীয় পণ্যের উপর। যদিও তার পরেও ভারত তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেনি। ভারত মস্কো থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত-পাক সংঘর্ষ থামানোর যে দাবি ট্রাম্প করেছেন সে বিষয়েও ভারত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। বরং বলা যায় ভারত আমেরিকার ভূমিকাকে অস্বীকার করেছে। হ্যালি মনে করছেন, ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ককে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি।
হ্যালির স্পষ্ট দাবি, ভারতকে কখনও চিনের সঙ্গে একই সারিতে বসানো উচিত নয়। বরং আমেরিকার উচিত, ভারতকে তাদের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদারের মর্যাদা দেওয়া। ট্রাম্প প্রশাসনকে বুঝতে হবে ভারত হল আমাদের গণতান্ত্রিক এক অংশীদার। রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর যে চড়া হারে শুল্ক ধার্য করা হয়েছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।
হ্যালি আরও দাবি করেন, যদি ভারতকে আমেরিকা এভাবে দূরে ঠেলে দেয় সে ক্ষেত্রে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে চিনের আধিপত্য বৃদ্ধি পাবে। যা বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট উদ্বেগের হতে পারে। ভারতের উপর শুল্ক চাপিয়ে যদি ভারতীয় পণ্যকে আমেরিকায় আরও মহার্ঘ করা হয় সে ক্ষেত্রে বিশ্ববাজার দখল করবে শক্তিশালী চিন। যা কখনওই উচিত নয়। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন জিনিসের দাম হয়তো মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।
হ্যালি মনে করেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ইজরায়েল-সহ আমেরিকার ঘনিষ্ঠ দেশগুলির সঙ্গে ভারত তাদের সম্পর্ক ক্রমশ মজবুত করছে। তাই ট্রাম্প প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে ভারতের বিপুল বাজারের কথা। পাশাপাশি গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার দিকটিও গুরুত্ব দিতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য-সহ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে ভারতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই ভারতকে কোনওভাবেই দুর্বল করার চেষ্টা ঠিক নয়।