বুধবার রাজ্যসভায় অনলাইন গেমিং বিল পাস হতেই এক সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট। এই বিলটির জেরে দেশে নিষিদ্ধ হতে চলেছে ড্রিম ইলেভেনের (Dream 11) মতো অনলাইন ক্রিকেট বেটিং অ্যাপগুলি। এদিকে ড্রিম ইলেভেন যেহেতু ভারতীয় ক্রিকেট দলের অফিসিয়াল স্পনসর। তাই মনে করা হচ্ছে, আসন্ন এশিয়া কাপে কোনও অফিসিয়াল স্পনসর ছাড়াই খেলতে হবে টিম ইন্ডিয়াকে। একই সঙ্গে দলের জার্সিতে থাকবে না ড্রিম ইলেভেনের লোগো-ও।
অনলাইন গেমিং সংক্রান্ত বিলটি আইনে পরিণত হতে এখনও অবশ্য ভারতের রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের প্রয়োজন। তবে তা কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এই আইন একবার চালু হয়ে গেলেই Dream 11 এবং My 11 Circle -এর মতো যে সমস্ত ফ্যান্টাসি স্পোর্টস অ্যাপগুলি রিয়েল-মানি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে, তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে তাদের বিজ্ঞাপনের অনুমতিও দেওয়া হবে না।
এদিকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ফ্যান্টাসি স্পোর্টস দুনিয়ার দুই কুশীলব ড্রিম ইলেভেন এবং মাই ইলেভেন সার্কেল হল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, ভারতীয় ক্রিকেট দল এবং আইপিএলে’র প্রধান স্পনসর।
রিপোর্ট অনুসারে, ড্রিম ইলেভেনের সঙ্গে ৩ বছরের জন্য ৩৫৮ কোটি টাকার চুক্তি রয়েছে বিসিসিআইয়ের। চুক্তির মেয়াদ আগামী ২০২৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত। অন্যদিকে আইপিএলের সহযোগী স্পনসর মাই ইলেভেন সার্কেলের সঙ্গে গত ২০২৪ সালে ৫ বছরের জন্য ৬২৫ কোটি টাকার চুক্তি করে বোর্ড।
কিন্তু এবার অনলাইন বেটিং অ্যাপগুলির এই দেশে নিষিদ্ধ হওয়ার উপক্রম হতেই কার্যত চাপে পড়ে গিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। চুক্তির দরুন ভারতের পুরুষ, মহিলা এবং অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দল ড্রিম ইলেভেনের নাম এবং লোগোযুক্ত জার্সি পরে মাঠে নামে। কিন্তু খুব শিগগিরই আসতে চলা নতুন আইনের কারণে সেপ্টেম্বরে হতে চলা পুরুষদের এশিয়া কাপে সেই দৃশ্য দেখার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
যদিও সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সইকিয়া জানিয়েছেন, ভারত সরকার যে নীতি জারি করবে তাঁরা সেই নীতি মেনেই চলবেন।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিসিসিআই সচিব বলেন, “আইনটি কার্যকর হওয়ার পর আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তারপর যদি এটি অনুমোদিত হয়, তা হলে আমরা স্পনসরশিপ নেব। যদি অনুমোদন না দেওয়া হয়, তা হলে আমরা স্পনসরশিপ নেব না।” আরও বলেন, “সিগারেট এবং মদের উদাহরণই ধরুন। এই ধরণের কোম্পানিগুলির স্পনসরশিপ নিষিদ্ধ হওয়ার পর কি বিসিসিআই তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে? আমাদের দেশে প্রচলিত আইনে যা কিছু অনুমোদিত, আমরা কেবল তাই করব। বিসিসিআই দেশের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক প্রণীত প্রতিটি নীতি অনুসরণ করবে।”