ভারত ঘোষণা করেছে যে তারা সফলভাবে পরীক্ষা করেছে অগ্নি-৫ নামের একটি মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা সম্পূর্ণ কার্যকর হলে পরমাণু ওয়ারহেড বহন করে চিনের যেকোনও স্থানে পৌঁছতে সক্ষম হবে। বুধবার ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ওড়িশা উপকূলে থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষায় সব ধরনের প্রযুক্তিগত ও কার্যকরী মানদণ্ড সফলভাবে যাচাই হয়েছে।
বিশ্বের দুই জনবহুল দেশ ভারত ও চিন দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে মুখোমুখি। ২০২০ সালে সীমান্ত সংঘর্ষে প্রাণহানির পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চলছে।
গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ায় এক সম্মেলনে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং মুখোমুখি সাক্ষাৎ করেন। এ মাসেই সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (SCO) সম্মেলনে যোগ দিতে মোদি ২০১৮ সালের পর প্রথমবার চিন সফরে যাচ্ছেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারত কোয়াড নিরাপত্তা জোটের অংশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াও রয়েছে। এই জোটকে চিনের প্রভাব মোকাবিলার উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়। এদিকে ভারতের চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানও পারমাণবিক শক্তিধর। গত মে মাসে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ভারত অভিযোগ তোলে পাকিস্তানের জড়িত থাকার, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে।
চিনকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও কিছুটা চাপে রয়েছে। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে ওয়াশিংটন মোদি সরকারকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারত যদি রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ না করে তবে ২৭ অগাস্ট থেকে ভারতের ওপর নতুন আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হবে।
ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি অগ্নি সিরিজের একাধিক স্বল্প ও মধ্য-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা বাহিনীর শক্তি বাড়িয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রকে চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কৌশলগত প্রতিরক্ষা ভাণ্ডারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতের এই সফল পরীক্ষার মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রতিরক্ষা শক্তি বহুগুণে বাড়ল, অন্যদিকে চিন ও পাকিস্তানের উদ্দেশে শক্তিশালী বার্তাও পৌঁছে গেল।
